
অরিন… আমার অরিন,
কেমন আছো
তুমি? জানি তুমি
ভালো নেই। পুরুষমানুষ কাঁদে না, তাই তুমিও চোখে অঙ্গার ধরে রাখো
শুধু। এতো রাগ, বিরক্তি, কটু কথা তোমার… কেউ বোঝে না, এ আসলে তোমার কষ্ট ঢাকার বর্ম। তোমায় কেউ বোঝে না, অথচ আমি কি করে প্রথম থেকেই তোমার ভেতরটা পড়ে ফেলি
বলো তো?
এই এই, শোনো, নিয়ম
করে কিন্তু ০৫ই জুন আমার সামনে দু প্যাকেট করে হাওয়া মিঠাই আনবে, একটা তোমার, একটা আমার। আমাদের বিবাহবার্ষিকীর দিনটা ভুলে যাওনি এখনো… নিয়ম করে আমাকে মালা পরাও,
সিঁদুর পরাও, আর সেই কথাটাই বলো... ‘দিস ইজ নট ফেয়ার, বিবি!’ আমি জানি তো, এটা ঠিক করি নি, কিন্তু…
শোনো না, যখন আবার দেখা হবে, তখনো আমায় একটা ছাদ দেবে তো? তবে তার আগে আবার
ভয়ানক জংলী ভাবে প্রেম করবো বছর দুই।
তুমি আর আমি, লুকিয়ে চুরিয়ে নিষিদ্ধ কাজের
মতোই দেখা করবো, ভয়ানক আদর করবো একে অপরকে, চুমু খাবো বিন্দাস চৌরাস্তার মোড়ে… তোমাকে
ক্ষত বিক্ষত করে দেবো আদরে প্রেমে।
এরপর আবার সেই গন্ধর্বের
স্মরণ… তুমুল ঝড়
তুফান উঠিয়ে, অনেকের শাপ শাপান্ত কুড়িয়ে বাড়িয়ে নিয়ে বলবো,
‘দেখেছো, কতো উপহার!’
আমি থাকতে
পারতাম তো এখনো তোমার কাছে, বলো? কিন্তু চলে আসতে হলো। তুমিও পারলে না আমায় ধরে রাখতে। কেন হেরে গেলে? আমি যে তোমাকে ছেড়ে থাকতে পারি না, জানো না? তবু একা আমাকে চলে যেতে দিলে!
সামান্য রাস্তা হাঁটতেও পারলে তুমিই সাথে যেতে, একা ছাড়তে
না কোথাও। আমি যে একা একা ছাই হয়ে গেলাম, স্রোতের তালে তালে নদী হয়ে
গেলাম, তুমি শক্ত করে কেন ধরে রাখলে না গো?
জানো, ‘বর’
বড়ো আদরের ডাক। জানো বর, সেদিন তুমি আমায় পায়ে আলতা আর মাথায় সিঁদুর দিয়েও
আঁকড়ে ছিলে… তোমার প্রিয় উচ্চারণ ‘যেতে নাহি দিবো’ বার বার মনে করছিলাম। আর তোমার সাঁঝবাতি খই ছড়ানো রাস্তা পেরিয়ে ধীরে
ধীরে কমলা আগুনে মিশে গেল, মিলিয়ে গেল কোনো দূরপাল্লার গাড়িতে নাম না জানা কোনো স্টেশনে। সেদিন আমার বন্ধ চোখেও বর্ষা ছিলো, তুমি বোঝো নি।
বাদ দাও এসব
কথা। আচ্ছা শোনো,
তোমার সাথে আবার যখন দেখা হবে আমার, তুমি
আমায় চিনে নেবে তো? আমি জানি আমি তোমায় ঠিক চিনবো;
যদি না চিনতে পারি, একবার “বিবি!” বলে ডাক দিও…
আর তুমি যদি না চিনতে পারো, আমি কিন্তু সেই আগের মতোই
তোমাকে আঁচড়ে কামড়ে কাতুকুতু দিয়ে, চুলের মুঠি ধরে
ঝাঁকিয়ে, তোমার গোঁফ টেনে দিয়ে, পিঠে
দমাদ্দম কিল মেরে বুঝিয়ে দেবো, আমি সেই… আমি সেই তোমার…
খুব বেশি
ধোঁয়া গিলছো কিন্তু ইদানীং, আমি নেই, তাই বারণ করার কেউ নেই বলে এসব চলবে
না কিন্তু... সব দেখে রাখছি, কাঠামো বদলের পর কিন্তু
কুরুক্ষেত্র করবো, বলে রাখলাম এখন থেকেই। হাজারবার বলেও শান্তি পাইনি কোনোদিন, তাই আজ আবার বলছি...
ভা-লো-বা-সি......
ইতি বলবো
না...
তোমার
সাঁঝবাতি
(০৫/০৬/২০২৫)