
বিপন্ন আড়াল
কী নিদারুণ দৈর্ঘ প্রস্থ ছুঁই-মাপি আমরা! অন্ধকারে হাতড়ে বেড়াই আমাদের শরীর। অস্তিত্ব। এখানে রাতেরা উৎসবে মাতে প্রতিটি দিনের উপস্থিতিতে। আড়ালে
এখানে জলটুকু মোলায়েম ছিলো। একটি মাছেরও কোন নাম রাখা হয়নি আর। তোমার চোখের মতন তাদের চোখ। জলের ভেতর জল ফেলে কাঁদেনা। কাঁদতে দেখি তাদের। তোমার চোখে
বাড়ি। সকাল। কিংবা রাত। আমাদের হলুদ সংসার। গত রাতে তোমার শরীরে বিড়ির গন্ধ ছিলো। অথচ, আমি গোল্ডলিফ টানি
কে.বি. আজ ফোন করেছিলিস। বন্ধু, আমাদের হলদেটে ঘরটায় এখনো আছি। আজ সন্ধ্যায় আমার মাছের মৃত্যু দেখেছিলাম। এখন ভুলে গেছি। কে ছিলো সে? মৃত্যুর আগে
মাছেরা আসে। মছেরা ভেসে যায়। কেঁপে ওঠে মৃদুল। হলদেটে-সবুজাভ-নীলাভ জ্বলন। আর অতুল একটি গোল্ডলিফ। কী নিদারুণ পোড়া ফিল্টার পড়ে আছে
জরা বিস্তার বিহঙ্গ
জরাগ্রস্থ বাগানের শেষ রাস্তায় আমরা আমাদের বিস্তার ভাঙি।
সমস্ত তারের যন্ত্রের মধ্যে আমাদের সবচেয়ে পছন্দ- কারো সেতার, কারো গীটার, কারো বেহালা, কারো খমক। আমার পছন্দের কিছু এখানে রাখা নেই। নিখুঁত গভীর সময় যা আছে বা ছিলো তার কোনটা আমার আর পছন্দের তালিকায় পড়েনা।
যখন পছন্দের তার-বাদ্য হিসেবে সময়-তার দেখি, দেখি একটা কড়াল হাওয়া চারিদিকে বয়। চুল উড়ে যায় ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকে। সময় মিউজিকে।
পরিবার। বাবা। মা। সবাই দোলে আমার পছন্দের সময়-তারে। বন্ধুরা আমার দুলছে যার যার বাদ্যে।
বিতৃষ্ণা আর জরায় পড়ে থাকে বাগান। উন্মুক্ত বাগান। কিছু মুক্ত বিহঙ্গ উড়ে যায় উড়ে আসে।
ভেন্টাস
ক্রমশ বেড়ে ওঠা নিঃস্ব এক ভেন্টাস
একজন নিঃস্ব রমণী; শূন্য প্রেমিকা
আঘাতের কোন ছবি হয়না-
বেদনার কোন অবয়ব নেই
নিঃসঙ্গ ছুতার খোদাই করে
লিখে রাখে- নিঃস্ব প্রেমিকার মুখ দেখতে নেই
সে বরং
বেড়ে ওঠে
মাথা উঁচু করে ওঠে
অদ্ভুত বীজ থেকে
পুরাণের পাতা থেকে এই সময়ে
মানুষ শব্দটি যখন একজন প্রেমিকা
ধুতুরাউন্মাদ হয়ে ওঠে ভেন্টাস
নিয়ন সন্ধ্যায় শাহবাগে হেঁটে আসে
জিপসি প্রেমিকারা
জিপসি প্রেমিকাদের
নিয়মিত মুখ পালটায়
আমাদের পুরাতন মুখ দেখে যায় নতুনেরা
তারপর ভুলে যায়
আমাদের স্মৃতির ঠিক পূর্বের স্মৃতিটা আমরা ভুলে যাই
শেষ যেবার দ্যাখা হয়েছিলো
কিছু জলপাই পাতা এনেছিল এক জিপসি প্রেমিকা
জলপাই মুকুট
মাথায় পরিয়ে বলেছিলো
সেও ভালোবাসতে জানে
বিষণ্ণ পাতার কোন পৌরাণিক ভূমিকা থাকেনা
আমাদের পাতাগুলো
ঝুলে ঝুলে ঝরে পড়ে আধুনিক হাওয়ায়
এপিঠ ওপিঠ
আসুন আপনাকে ভালোবাসি
বসুন আপনাকে চুমু খাই
চলুন অন্ধকারে
আলনায় তুলে রাখুন পোষাক
ছুঁয়ে দেখুন অন্ধ রাত
এখানে কারো কোন চোখ নেই
আপনাকে বলেছিলো-
আপনার স্ত্রীর বান্ধবি।
'এসো। শুতে এসো'
আপনার স্ত্রী আমাকে ডাকছে
সরি, দাদা। আজ ফোনটা রাখছি।
[“দরোজা বন্ধ, ভাঙো”
মিনজিরিতলার উদ্দোগে
কালজয়ী প্রকাশনী থেকে]