দো'তলা
বাসার ছাদে দু'জন
একজন দাঁড়িয়ে,
একজন মাটিতে বসে
:-তোমাকে না কতবার রাত জাগতে বারণ করেছি ?
কখনো শোনোনি আমার কথা -
এই জন্যই তোমার উপর আমার রাগ হয়, জেদ উঠে।
তবুও আমি নিরুপায় ভেবে অসহায় চোখে তোমার দিকে তাকিয়ে থাকি
আমি ভাবি,
এই বুঝি তুমি কিছু বলবে কিন্তু
তুমি পাথরের চেয়েও শক্ত প্রতীক্ষারত।
কতবার তোমায় বললাম,
চলো উঠি,
চলো উঠি।
আকাশটা ক্রমশ নিগূঢ় হয়ে আসছে,
চলো উঠি।
এখুনি রূপকথার বর্গির ন্যায় ঝাঁপিয়ে পড়বে ঝিঁঝিঁর দল,
চলো উঠি।
তুমি শ্যাঁওলাধরা ছাদের উপর তবুও ঠায় বসে রইলে।
আকাশের দিকে সন্তর্পণে তাকিয়ে উন্মুখ হয়ে কি যেন খুঁজলে,
স্মৃতি হীন বিজন অন্ধকারে।
আমি জানিনে,
শুধু জানি
আমি তো আমার আমিকে তোমার মাঝে খুইয়ে ফেলেছি,
তুমি ও কি তাই ?
-: আমি জানিনে
শুধু জানে,
মরুভূমির ন্যায় শুকিয়ে যাওয়া আমার তৃষ্ণার্ত হৃদয়;
বুকের প্রতিটি অমূল্য স্পন্দন
যেথায় ক্ষণে ক্ষণে নিগূঢ়তম দীর্ঘশ্বাস বেরোয়
ভালোবাসি ভালোবাসি বলে বুকের ভেতরে উন্মাদতার মাতম তোলায়।
তুমি কি সে আর্তি শুনতে পাও, অরণী-
কালের
খেয়ার মতো
কোয়েল-দোয়েলের এর নরম শরীরের মতো
ক্যালেন্ডারের এক একটি তারিখের মতো
যে আর্তি সর্বত্র তোমায় খুঁজে বেরায়
একান্তে যার হাসি ছাড়া আমার মুখ হাসেনি
যার রং ছাড়া আমার মন কখনো সাজেনি
প্রতীক্ষা তো তাই আজীবনের ও সর্ব জীবনে।
:- কি রহস্যময়
স্বভাবের তুমি অরণ্য
-: আমি তো শুধু তোমার মাঝেই বরেণ্য
:- ভয় হয় যদি
কখনো হিজল বনে,
সাতরঙা মুক্তোর ভাণ্ডারে,
জঠরের অন্ধকারের ভীরে হারিয়ে যাও ?
-: আমার কিছুই নেই বলার, শুধু বলবো
রাতজাগা ঐ নিম পেঁচাটির চোখে আর সোনালী সন্ধ্যার ঝিঁঝিদলের
মিটিমিটি আলোয় আমায় খুঁজে নিও।
আমি তো সর্বত্র তোমার সঙ্গেই আছি; এবং এভাবেই থাকবো। আমি যে তুমি। তুমি যে আমি।