জন্মদিনের শুভেচ্ছা সহ কবি সোয়েব মাহমুদ এর ২৫ কবিতা

মধ্যবিত্ত বুকপকেটে সযত্নে তোলা থাকে একটা শব্দআজন্ম শীতের কুয়াশায় তোলা থাকে দুই অক্ষরের সমুদ্র '' তুমি''।

দ্যাখা অদ্যাখা কাব্য (এক)

আমি চাই তোমার সাথে কোথাও কখনোই আমার দ্যাখা না হউক।
আমি চাই, প্রানপনে চাই।
তাই এড়িয়ে যাই, তোমার হাটা পথ।
এড়িয়ে যাই পরীবাগ, মালিবাগ,বাসাবো এবং ছায়াবীথি।
এড়িয়ে যাই প্রানের শহরটাও।
এখন বুঝবেনা তুমি,
যে তুমি ভালোবাসা মাড়িয়ে হেটে গ্যাছো।
যে তুমি অস্বীকার করে পালিয়েছো ভালোবাসা থেকে।
যে তোমায় ইতিহাস মনে রাখবে হত্যাকারী,ভালোবাসার!
সেই তোমার সাথে আমার কোনো কথা নাই।
তুমি আজীবন দন্ডপ্রাপ্ত আসামী ভালোবাসার।
বন্দীত্ব তোমার সোনার খাচায় আর কৌশলী ভিড়ে।
আমি চাই তোমার সাথে এ জন্মে আমার আর দ্যাখা না হউক।
আমি চাই আমার সাথে একবার তোমার দ্যাখা হউক।
আমি চাই একবার,
এককাপ ধোয়া ওঠা চায়ের কাপে,
চোখে চোখ রাখা আমার তোমার দ্যাখা হউক।
আমি চাই একবার,
তুমি আমার চোখে চোখ রেখে দ্যাখে নাও আমি তোমাকে,
আমার চোখে তোমাকে কিভাবে দ্যাখি?
একবার দ্যাখা উচিত তোমার।
মিথ্যা ঠাস-বুনটের শহরে আমি চাই, একবার
আমার সাথে তোমার দ্যাখা হয়ে যাক।
আমি শুনতে চাই আমার তুমি কি বলো আমায়?
আমি দ্যাখাতে চাই তোমায়, আমার অস্তিত্ব।
আমার জন্ম-মৃত্যুর পরিসংখ্যান,
আমার প্রতিমুহুর্তে হারিয়ে ফেলা নি:শ্বাস,
আমার বেগুনি পদ্ম, তোমার রংমেশানোসত্য।
আমার সান্ধ্যকালীন ফটোগ্রাফ কি বলে তোমায়?
আমি চাই, হ্যা হ্যা হ্যা আমি খুব করে চাই।
আমি চাই তোমার সাথে আমার দ্যাখা না হউক।
আমি চাই আমার সাথে একবার তোমার দ্যাখা হউক।
দ্যাখা-অদ্যাখা কাব্যের শেষ হউক,অন্তত।

দ্যাখা অদ্যাখা কাব্য (দুই) 

এক ক্ষয়িষ্ণু শহরের ইট-পাথরে ঘষেঘষে বুকে বয়ে
নিয়ে যাওয়া হৃদয় আর দেয়ালে ভর দেয়া কথাগুলো; যা বলা হয়নি তোমায়।
তা পাশে নিয়ে বসে বসে দ্যাখছি,
আত্মবিধ্বংসী খেলায় মত্ত আমি দু-চোখ ভরে দ্যাখছি বিলবোর্ড ভালোবাসার শহর তোমার।
কত উজ্জ্বলতা, কত আত্মপ্রবঞ্চক হাসি নিয়ে,
সূখ সূখ হাসি মুখ নামক বিজ্ঞাপনচিত্রে তুমি, ফেইড ইন অর আউট।
ঝুলে আছো ভালোবাসা কটাক্ষ করে!
তাই আমি চাই,
হ্যাঁ, আমি চাই তোমার সাথে কখনওই আমার দ্যাখা না হউক!
হ্যাঁ, আমি চাই অন্তত একবার মিথ্যে করে হলেও তোমার সাথে, তোমার দ্যাখা হউক!
আমি চাই আমাদের অদেখা অথচ খুব চেনা দেবদারু-রাধাচূড়ার
সারিসারি ছায়ায়, এক নিয়তি নির্ভর জেব্রাক্রসিং এ
কিংবা কোনও রাস্তায় কবিতাময় লিফলেটে,
অথবা কোনও এক ২৩শে পরীবাগের কোনায়; আমার যে তুমি,
কেবলই আমার যে তুমি,
আমার সাথে সেই তোমার দ্যাখা হয়ে যাক.....

দ্যাখা অদ্যাখা কাব্য (তিন)

রিকশা কিংবা বিছানার বামপাশটায় অথবা হৃদয়ের বাম-অলিন্দে
একটা অসহ্য শূন্যস্থান; আশ্চর্য শুন্যস্থাণ নিয়ে পরিব্রাজক আমি।
বেঁচে থাকি নিঃশ্বাস নেই এই যোণীবাহিত পৃথিবীতে।
অদ্ভুত নষ্টালজিক কিছু শব্দের হাহাকারে আমার ঘুম আসেনা।
তুমিহীন তুমিময়তার সেই শুন্যস্থাণ হিলিয়ামে পূর্ন কানায় কানায়
- হাইড্রোজেনের দুই জোকার উড়ে যাওয়া সাংকেতিক পানির
উপচে পড়া ঢেউ নিয়ে তাই রিকশাটাকে নদী ভেবে
রাস্তায় হাটি আমি, বিছানাটার সমুদ্র হোয়ে ওঠা দ্যাখতে দ্যাখতে
একটা নিস্তব্ধতার একাকীত্বে গোল হোয়ে বসে থাকি
পাশের বারান্দায়।
অপেক্ষা আর অপেক্ষায় কাটে আমার সোয়া দুই বছর!
ছুটি থেকে ছুটি নেয়া হয়না আমার,
দেয়া হয়না এক দেয়াশলাই বক্সে- ভালোবাসা মসলিন।
আমি চাই
তাই আমি চাই তোমার যে তুমি; তারসাথে আমার কখনওই যাতে দ্যাখা
না হয়।
তোমার; তোমার সাথে আমার দ্যাখা সে'তো ব্রিটিশ
সাম্রাজ্যে এক নিগৃহিত বাংলার ইতিহাস!
তাই এই আমি চাই,
খুব কোরে চাই এই স্বাধীন বাংলায় আমার যে তুমি
সেই সন্ধ্যের ডুবে যাওয়া আকাশে লাল শাড়ি ছোট্ট লাল টিপে
ছাদে দাড়িয়ে
আমায় খোজায় ব্যস্ত যে অস্থির তুমি
সেই তোমার সাথে আমার দ্যাখা হউক,আবার।
আবার,
রিকশার বা'য়ে বসো তুমি, বিছানার বা'য়ে শুয়ে পড়ো।
আমি পাশে বসে আংগুল ছুই আংগুলে,
ছুয়ে দেই তোমার ঠোটের তিল আমার নিঃশ্বাসে,
সরিয়ে এলোমেঘ চুমু আকি কপালে তোমার,
কিছু শব্দে আবার কিছু কথা হউক,
হউক লেখা একটা কবিতা আবার দ্যাখার পর হউক
ফুচকাতে ভর করা এক সন্ধ্যে।
একটা পায়ে হাটা পথে গোলাপ ফুটুক;আবার।
একটা ছবি হউক ভোরের,
একটা ঘর হউক আমাদের; ছোট্ট এক ঘর।
তোমার আমার মাঝে ছোট্ট একটা বালিশ হউক,
ছোট্ট এক আংগুল আধোবোলে বাধুক আমাদের।
তারপর ঠিক ৪৭ বছর পর আমি মরে যাই তোমার ঠোটে...
৪৭ বছর পরবর্তী মৃত্যুর আগে
ভালোবাসা-বাসি সংসারের জন্য হলেও আমার
- তোমার আমার সাথে দ্যাখা হউক অথবা হোয়ে যাক...

একজন মলয়কে

প্রিয় শহরবাসী, বিয়েটা কোরেই ফেললাম আজ!
হ্যাঁ, ভুল শোনেন নি।
ঠিক বলছি, একরত্তি মিথ্যে নেই এতে।
যতটা মিথ্যে সাঁজিয়ে আপনারা বলেন মদ্যপ মিথ্যে বলেনা,
ঠিক তারচেয়ে বেশী সত্য,
পৃথিবীর আদিম ধর্মগ্রন্থের থেকেও সত্য
আমি বিয়ে করে ফেলেছি এই একটু আগে।
ঠিক যখন কবিতা ভালোবেসে উন্নাসিক হতে চাওয়া মলয়,
আপনাদের ছলাকলার ছন্দ বিশারদ হয়ে ওঠা নিতে
 না পেরে চীৎকার কোরে উঠেছে,
ঠিক সেই সময় নুরজাহান রোডের দেয়ালে আমি,
আমি সোয়েব মাহমুদ মুত্রাঘাতে,
হাতের পরাস্ত রেখাগুলো কে আপনাদের হেরেমের
বিশ্বস্ত প্রেমিকার স্তনে লেপ্টে দিয়ে,
অতীত আর ভবিষ্যৎ কেটে দিয়ে
মায়ে'র চেয়ে অশ্লীল এক নারী,
শব্দ শব্দে লিখা কবিতাকে বিয়ে করে ফেললাম,
সম্পূর্ন ধর্ম মোতাবেক আকাশে তাকিয়ে
তিনবার 'কবুল" প্রত্যাখান না কোরে জবাবে
তিন বিদ্যুৎ চমকে বিয়ে সম্পন্ন আমাদের।
প্রিয় শহরবাসি, বিয়েটা এভাবেই হয়ে গ্যাছে।
এর বেশী আর কিছু শুনবার যোগ্যতা ছন্দ অক্ষরের
অন্তর্বাস ছোঁয়াতে হারিয়েছেন আপনারা।
কবিতাঃ একজন মলয়কে।

কবিতা অথবা কথা

আমারতো কবিতা লিখবার কথা ছিলোনা, শুভা।
আমারতো কবিতায় আসবারই কথা ছিলোনা।
আমি বড়জোর লিখতে পারতাম উনত্রিশ দেশ ভ্রমণ।

আমি , যদি ইচ্ছে হয় খুব বেশী লিখবার
তবে লিখতে পারতাম দৌড়ে পালানো কোলে পাঁচবছর বয়সী শিশু নিয়ে চারপাশ  থেকে গুলি হওয়া সময়, বেলগ্রেড।
লিখতে পারতাম ক্রেমলিনের বেশ্যার মেয়রপাড়া উচ্ছেদ নিয়েও,
লিখতে পারতাম শরণার্থী শিবির বৈরুত,
যেখানে নামাজের বিছানায় অগাষ্টিনের যিশুকে ডাকা প্রহর।
লিখতে পারতাম কোকেইনে ভর আলেক্সান্দ্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়,
লিখতে পারতাম পয়েন্ট টু টু বোর রাইফেল, নিউ ওয়েলস ।
লিখতে পারতাম হুগো শ্যাভেজের দিকে তাকিয়ে হেসে দেয়া বোগোটা এয়ারপোর্ট সঙলগ্ন রেস্তোরা।
লিখতে পারতাম ভালোবাসাহীন সঙ্গমের রেড লাইট ষ্ট্রিট অসলো,
ব্রোথেলের বেথেলহাম,
নগ্নতার সুইস সেনাবাহিনী হেড কোয়ার্টার, যেখানে যোণীর ভেতর লুকায় ধর্ম।
লিখা যেতে পারতো আখের গন্ধময় কোপেনহেগেন ছয়,
লিমাসল কিঙবা পাফোসের ফেনীল সমুদ্র।
লিখা যেতে পারতো অষ্ট্রিচ পাখির ডানায় শুন্যতা,
রিগা কিংবা স্লোভেন চার্চের বাইরে ক্যাডিলাক,
অপেক্ষায় থাকা তরুণীর উরুতে গুজে দেয়া চিঠি।
কিংবা ক্যানোপির ধারে ডায়মন্ড হার্বার।
অথবা রয়েল ডাচ পরিবার ঘুমাতে থাকা সময়ে,
নিরাপত্তারক্ষী সাতাশের উদ্ভিন্নযৌবণার একান্ত সময় নিয়েও চাইলে লিখা যেতো।
লিখা যেতো কাবুল, পেশোয়ার অথবা দিল্লী।
লিখা যেতো জেগে থাকা ষোড়শী ঠোঁটে সাড়ে চারশ বছর, আইয়ানাপা।
লিখা যেতে পারতো তেরো বছরে শিক্ষিকার ভারী বৃষ্টিপাতে আমার ধর্ষিত হওয়া দুপুর নিয়েও।
লিখা যেতে পারতো আমার শহর ঢাকা নিয়েও।

শুভা,
সব বাদ দিয়ে আমারতো
নিজ মৃত্যু সনদ পাঠ করা অশ্রাব্য ভাষনে,
নিজ মৃত্যু সংবাদ জানাবার জানাজা, কবিতা লিখবার কথা ছিলোনা।

খোলা জানলা (প্রথম খন্ড)

বাতাসে মিশে থাকা তোমার গন্ধ,
ঘর জোড়া আমাদের ভালোবাসার গন্ধ, দরোজা খুলতেই
প্রাচীন স্রোতে ভাইস-ভার্সা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে কাঁপিয়ে দিয়ে যায় ফুটন্ত জ্বরে।

আমি হয়ত বোঝাতে পারছিনা, তোমায়।
তুমি কিভাবে থেকে যাও প্রতিমুহূর্ত, প্রতিক্ষণ।
যেভাবে যেভাবে আমার হৃদয়ে শব্দ এসেছে, আমি জাষ্ট কবিতার
খাতায় বসিয়েছি।
কিছু যে হবে জানতাম না,
এখনও কিছু একটা যে হয়েছে তাও কিন্তু না,
সামনেও হবে সে কথা জোর গলায় বলতে পারছিনা, আমি।
জানলার বাইরের আকাশটা একেকভাবে ধরা দেয়
একেক সময়ে।
জানলা থেকে দৃষ্টিপাতের জ্যামিতিক নিয়মই হয়ত দায়ী,
সেটাও কিন্তু নিশ্চিত নই আমি।
কিন্তু ভালোবাসার প্রতিটা স্পর্শে আমি নিশ্চিত জেনেছিলাম
তুমি, তুমি কেবোলই আমার, আমার
আন-আর্মড ভালোবাসা।
তাইতো ভালোবাসার ইশতেহারে গোটা গোটা শব্দ হেটে যেতে
যেতে কিছু একটা লেখা হয়ে যায়, লীলা।

" আঙুলে তুলে নেই বাতাস, পলকে রোদকণাদের।
তোমার চশমা সরিয়ে, চোখ ছুঁয়ে ছড়িয়ে যাই শরীরে।
হালকা সাদায় ঢাকা পরিপাটি চাদর, অস্থায়ী।
সরিয়ে মুক্ত করি আকাশপথ, হৃদয়ের।
বলেছি কাছে এসো, যতটা কাছে এলে দূরত্ব শব্দটা মৃত্যুবরণ
করে। যতটা দূরত্ব থাকলে নিঃশ্বাসে কাটে নিঃশ্বাস।
বলেছি অন্ধকার চাইছি তোমার, চাঁদের আলোর উষ্ণতায়।
শুন্যে তুলে নিয়ে তোমায়, বলেছি শুন্যের শরীরে কোনও
পোশাক থাকবেনা।
তোমার ঠোঁটে ঠোঁট রেখে বলেছি কোনও ইনফ্রা থাকবেনা লালের
কাছাকাছি।
তোমার ভেতরে নিজেকে প্রবেশ করিয়ে বলেছি, স্বপ্ন নয় সিঁড়ি।
ভালোবাসার অক্সিজেন টেনে নিতে নিতে দুজন ভিজেছি দুজনার
বৃষ্টিতে।
অনুভব করেছি তোমার সাজানো নখের পালিশে  কাঁপন।
আড়াল সরিয়েছি সকল আলোর, মিথ্যের বেসাতীর।
বিধিসঙ্গত অথবা সম্মত পামীর মালভুমিতে মাথা রেখে
দুইজোড়া চোখ বরন করেছে সুপ্রভাত।"

এভাবে তুমি থাকো, থেকে যাও শব্দ থেকে গভীরতর কোনও শব্দে।
যেখানে তোমার ছাদে দাঁড়িয়ে দেখা আকাশটা ভালোবাসা
শব্দটা থেকেও সুন্দর, হয়ত।

খোলা জানলা (দ্বিতীয় খন্ড)

অথচ কি বোকা আমি, কোনও উত্তর চাইনি।
প্রশ্নও করিনি কোনও।
বলে গ্যাছি কেবোল আমার কথাটাই।
জানতে চাইনি তুমি কি ভাবছো?
একটা যুগের স্পষ্ট ব্যবধান রেখা আমাদের মাঝামাঝি,
মুছে দিচ্ছে অজান্তেই আমার হাতের রেখায় তোমায়
নিয়ে হেটে বেড়ানোর ইচ্ছে।
লীলা, আমি হয়ত বোকাই থাকবো আমৃত্যু।
আমি হিসাব বিজ্ঞান কিংবা গাণিতিক সংস্করণে কাচা বড্ড।
আমি তোমাকে বিব্রত করে ফেলেছি হয়ত, বেশীই।
তোমাকে নিয়ে হয়ত লিখবো, হয়ত চোখের পাতায় আঁকবো স্বপ্নিল স্থাপত্য।
হয়ত দ্যাখা হবেনা আমাদের, কোথাও।
বারবার এড়িয়ে যাবে তুমি, আর আমি সব বুঝে মাঝেমাঝে
হুটহাট চলে আসবো শাহবাগ।
এভাবেই লীলা কাটবে বহুকাল, স্পর্শহীন ভালোবাসায়।
তুমি হয়ত  জানবেই না তোমার গন্ধ আমি পাই,
তোমার গন্ধ আমি পাই, প্রতিদিনকার বাতাসে।
যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দেয়ালে হয়ত দেখবে কোনও অজ্ঞাত মৃত্যু খবর,
বুকের ভেতর একটা কান্না চেপে আসবে হয়ত,
চোখের পাতায় হয়ত ঘুচে যেতে পারে ব্যবধান,
হয়ত সেদিন তুলে নেবে মুঠোফোন।

ওপার থেকে এক অচেনা কণ্ঠস্বর  বলে দেবে
মৃত্যুটাও আমার জন্মের মতন একা।
আচ্ছা সেদিন, সেদিন কি তুমি একটা লাল রক্তজবা টিপ পড়বে?
আচ্ছা সেদিন, সেদিন কি তুমি কাঁদবে একবার?
সেদিন কি একটা বৃষ্টি মুছে দেবে তোমারামার এক যুগের ব্যবধান?

ভালো আছি

ভালো আছি, খুব ভালো আছি।
জন্মেই, মৃত্যুর মতন জীবন। এক ভয়াবহ
যাপিত জীবন নিয়ে আমি বেশ ভালো আছি।
আকাশ হতে চেয়েছিলাম রঙিন আইস্ক্রিম মুখে লাল হয়ে
যাওয়া শৈশবে।
মাঝেমাঝে অবাক বিস্ময়ে ভাবতাম আকাশ নয়,
আমি পাখি হলে বেশ ভালোই হতো।
সীমান্তরেখা বলে কিছুই আটকে রাখতে পারতোনা আমায়,
আমি উড়তাম, উড়ে উড়ে যখন খুশী ছুঁয়ে দিতাম তোমায়।
এক কৈশোরের পড়ন্ত দুপুর আমাকে টেনে ঘর থেকে বাইরে আনে,
সেইযে বের হলাম;
এরপর এই গঙ্গার বুড়ি আরো বুড়ো হয়েছে,
পাক ধরা চুল শুকিয়ে পাটগাছ হয়েছে,
চোখে ছানিতে চাঁদের বুড়ি থামিয়েছে চড়কাটাও।
কিন্তু আমি কিংবা আমার দুটো পরিব্রাজক পা থামেনি কোথাও?
সেইযে বেড়িয়েছিলাম, আর ফেরা হয়নি।
মাঝে কিছুকাল সাময়িক বিরতীতে মাথা রেখেছিলাম
এক নিটোল বুকে, বিষাক্ত যোণীকে জরায়ু তুল্য ভেবে
মেনেছিলাম করোটীর উল্লাস!
সেই ভূল, চার অক্ষরের গানে বুকপেতে, নাকে চেপে
হৃদয়ের গেরিলাযোদ্ধা হয়ে বুঝলাম,
এক হলদে অসুখে উচ্চারণগুলো সব শোকেজর্জর,
চারপাশে, আমার চারপাশে প্রেমিকা নেই কোথাও?
নরোম হৃদয়ে নিষিদ্ধ গোলাপের চাষাবাদযোগ্য ভুমি নেই কোথাও?
চারপাশে, আমার চারপাশে কিছু অহংকারী মূখস্থমানুষ।
চারপাশে, আমার চারপাশে ভালোবাসার হত্যাকারী কিছু সফল মানুষ।
জিরো পাওয়ারের হাসি মুখ জ্বলজ্বলন্ত ক্যামেরার ভিতর।
ব্যর্থতার দায় ঠোঁটে নিয়ে,
ভালোবাসার পরাস্ত সৈনিক আমি তোমাদের অক্ষরভরা,
শীতার্ত যতিচিহ্নহীন কুয়াশার উপন্যাস পড়তে পারছিনা
আর।
তাই তোমার দেয়া
ঘুমের মাঝে; কালো স্বপ্নে সবুজ শাড়ির আঁচলে
বেধে নিয়ে মুঠোভরতি স্পর্শ,
হয়তো শত-সহস্র বছরের এই বাংলার ইতিহাসে তোমাকেই লিখতে শুরু করবো আবার।

চায়ের সংসার

একটা প্রচ্ছন্ন দুঃখের বাতাস ঝাপটা দিয়ে চলে যায়, অন্য ঘরে।
নির্বাক কথাবলা এক জোড়া চোখ।
আমি সেই চোখজোড়া নিয়ে কোনও কথা বলতে আসিনি।
আমি ঘূর্ণাক্ষরেও বলছিনা সে চোখের কথা,
যে চোখের পাতায় ভালোবাসার দাবীতে প্রতিবাদমূখর মিছিল হয়, প্রতিক্ষণ।
আমি ভীষণ বেয়ারাপনায় , গোয়ার্তুমিতে এড়িয়ে যাচ্ছি ,
যে চোখে নৌকাডুবি,
যে চোখে বাতাসের ছায়া পড়ে,
যে চোখে হেঁটে যাই,
যে চোখে প্রমত্ত পদ্মার গর্জন।
এড়িয়ে গিয়ে সে চোখের কথা, পৃষ্ঠা উল্টাই।
যে কালো চোখ জোড়ায় মেঘ ভর,
সেই চোখ ভালোবাসাতাড়িত আমাকে,
হ্যাঁ, ঠিক পড়ছেন আপনি ছাপা হওয়া কালো অক্ষরগুলোতে যে ছবি দেখাচ্ছে
 তাতে বিন্দুমাত্র মিথ্যে নেই জানেন।
দু জোড়া চোখ ভীষন অবাস্তবতায় বাঁচতে শেখায়, স্বপ্ন দেখায়, রাত জাগায়।

মৃদু আলোতে, হঠাৎ আদরে।
ঘন অন্ধকারে, হঠাৎ শাষনে।
সান্ধ্য আইন জারি করা ভালোবাসায় এক জোড়া চোখ
আজকাল দশটায় আমায় বাড়ি ফেরায়।

সমাপ্তের অসুখ

ভেবেছিলাম লিখবোনা,
কিন্তু আবার প্রপঞ্চক মায়ায় ,
চোখের মায়ায় পড়ে যাই।
যে চোখ প্রতিটি শব্দ থেকে ধুসর সরিয়ে , বিষাদগ্রস্ত মৌণতা ভেঙ্গে দেয়।
তাকে কিভাবে, কিভাবে এড়ানো যায় জানাবেন?

দুটি চোখের অগ্নিকান্ডে ভস্মিভূত হৃদয় আমার, হাঁটে।
হেঁটে যায় মাণচিত্রের খোঁজে,
হেঁটে যায় আশ্রয়ের খোঁজে,
হয়ে শরণার্থী অই দুটো চোখের কালোয়।

-\ কী লিখলেন?
-\ ওহ্, চা এনেছেন!
-\ কী লিখলেন, দেখি না। দেন দেখি!
-\ নাহ্, ও কীছুনা বাদ দিন।

চায়ের লিকার ঢালছেন, ঢালছেন চিনি। পট থেকে দুধ বের করে কাঁপের
ভেতর নাড়তেই
নড়ে ওঠে একশ পাঁচ জ্বরের প্রেমিক।
কাপের ভেতর খিলখিল করে অসুস্থ সময়ে সুস্থ শিশুর মত ফুটে উঠলো
চায়ের হাসি- হাসিমুখ।
অথচ জানলেই না,
আপনি থেকে তুমিতে এসে, আমি দিব্যি চায়ের কাপের ভেতর
তোমার চোখ জোড়া উপেক্ষা করে ঈশ্বরের মতন লিখেছি

তোমার চোখ ভর্তি জলে, কাপ ভর্তি সংসারে
ডু্ঁবে যেতে যেতে বলি আমিতো সাঁতার জানিনা।

নন্দিনী  

এই, এই রিকশা যাবে?”
দুপুরের নির্জনতা খুন কোরে খুনী তুমি নীল শাড়িতে দাঁড়িয়ে।
মনে আছে, মনে আছে তোমার?
হয়তো ওখানেই শেষ হতো, শেষ হতো আমাদের।
হয়ত ওখানেই থেমে যেতো সবটুকুন।
তুমি হয়তো জানতেই না, তোমার পথ চলতি পথে নিরীহ সম্বোধনে
থেমে গ্যাছে প্রেমিক এক।
হয়তো এভাবেই পৌঁছে যেতে তুমি তোমার গন্তব্যে,
হয়তোবা জানতেই না পৌঁছে যাওয়া মানেই বুকের ভেতর নিঃস্ব নালিশ।

ঠিক তখনই তোমার কল্পনার অধিক বাস্তবতায় হঠাৎ বৃষ্টি।
ভেজা চুলে তুমি এসে দাঁড়ালে পাশে আমার।
আমি থেমে যাই,
নির্বাক মুগ্ধতায় নিতে থাকি তোমার সোঁদা গন্ধ।
আমি দেখতে পাচ্ছিলাম,
দেখতে পাচ্ছিলাম তোমার গাল বেয়ে ভালোবাসার রেলিঙে বৃষ্টির ফোঁটা।
আমি ডুঁবে যাচ্ছিলাম মাদকতায়।
তোমার চুল, চোখে, নাকে , ঠোঁটে।
আমি লিখে দিচ্ছিলাম বুকেতে ঘর, বাড়ি যাচ্ছে।
হঠাৎ সম্বিত ফিরতেই দ্যাখি নেই তুমি।
এদিক ওদিক কোথাও নেই?
অদৃশ্য তুমি ছায়ালোকে।

না পেয়ে তোমায়, আমি দাঁড়াতে থাকলাম।
দাঁড়াতে থাকলাম সেখানে, যেখানে আজ থেকে ঠিক একশত দিন আগে
এই, এই রিকশা যাবে?”
ডাকটায় এক ছিপছিপে নৌকোর নাম দিয়েছিলাম নন্দিনী!

মানুষ

বড্ড বিচিত্র জীবন, বিচিত্র খাদ্যাভ্যাসের বিচিত্র মানুষ।
সেখানেই মানুষ আমাকে খুঁজেছিলো যেখানে আমি নেই।
মানুষ সেখানে কখনও আসেনি, যেখানে আমি ছিলাম অপেক্ষার সীমান্তে মানুষ দেখবো বলে।

কেউ

আমি থেমে যাই,
মেয়ে আমি থেমে যাই।
চোখ বুজতেই ফ্লাশব্যাক-
মন খারাপের দুপুর,
মন ভালো নেই বিকেল,
রিকশা নির্ভর ঘুরে বেড়ানো।
আমাদের ছবছরের যে সম্পর্ক তার নাম কি?
আমরা কথা বলেছি,
আমরা হেঁটেছি।
আজ বুঝলাম ভালোবাসি এবং ভালোবাসি বলেই
আমি ফিরে ফিরে এসেছি, তোমার দরোজায়।
মেয়ে,
তোমার চোখ ছুঁতে চাই, একবার
চোখ ছুঁয়ে লিখে দিতে চাই-
যাত্রাবিরতীর ফুলষ্টপে একটি বার জড়িয়ে তোমায়
আমি বেঁচে উঠতে চাই আবার।
নিজেকে কষ্ট দেবার যে সেফটিপিন তুমি বিদ্ধ করে রেখেছো তোমার বুকে,
তা উঠিয়ে আজন্ম কফিনের মানুষ আমি ঢুকে পড়তে চাই আবার জীবনে।
সময়ের অরাজকতায় যে ভালোবাসা বুঝিনি আমি,
সেটার দাবি নিয়েও বিব্রত করবোনা তোমায়।
আমি কেবোল বিকেলের স্বেচ্ছাচারী বাতাস হয়ে তোমাকে জড়াবো,
কাধে মাথা রাখা সন্ধ্যায় ছুঁয়ে দেবো চোখের বারান্দা,
সময়ের দীর্ঘ ঢেউ হয়ে বিব্রত করে ফেললে
কবিতাটি ছিড়ে ফেলে কপালের অবশ টিপ সরিয়ে একটু নীচে পড়ে নিও।

মাই এইম ইন লাইফ

অনেক ছোটবেলায় আকাশ দেখে মা-কে বলেছিলাম মা অই দ্যাখো আকাশ, নীল আকাশ। একদিন তোমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবো। ফাইনাল পরীক্ষাটা শেষ হউক।মা কেনো হেসেছিলেন তখন এই নিয়ে রাগ করে ভাত খাইনি দুইদিন। নিজের অক্ষমতায় শুধু কেঁদেছিলাম। আজকাল এতটা অক্ষম আমি যে কাঁদতেও পারিনা।
আজ যখন নরোম রোদ পায়ের কাছে পোষা বেড়ালের মত আদুরে ভঙ্গিতে নাক ঘষে , মুখ ঘষে তখন আকাশ দেখতে জানলায় দাঁড়াই, দাঁড়িয়ে দেখি আমার অক্ষমতা। কখনো আকাশ চিরে এরোপ্লেনে দাপিয়ে বেড়িয়েছি উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম। কিন্তু মেঘ , মেঘ তো ছুঁতে পারিনি কখনো! আকাশ, আকাশ সেতো বুকে মাখতে পারিনি। তাই উনিশটি ভিসার , ভিসেরা রিপোর্ট সংবলিত পাসপোর্ট ছিড়ে ফেলি। উড়িয়ে দেই ব্যর্থতার, অক্ষমতার সনদ।
আমি আসলে কি চাই? এর উত্তর পেয়েছি অনেক পরে। অন্য মহাদেশে।
পেরুর রাজধানী লিমাতে রাত তিনটা ঝুম বৃষ্টি , ক্রিশ্চিয়ানা এবং আমি ভিজতে ভিজতে জানলাম আমি ঈশ্বরের পৃথিবীতে কিছুই চাইনা। ছোটবেলায় আবেদনপত্র মানেই বুঝতাম মিথ্যা চাহিদা পত্র । তাই চিঠি লিখতাম। চিঠিতে মিথ্যা লেখা যায় হয়তো মিথ্যা বলা যায়না।
যেমন তোমার লেখা শেষ চিঠিতে আমি পোড়া হলুদের গন্ধতে জেনে নিয়েছিলাম তুমি ছেড়ে যাচ্ছো?
ছেড়ে যাচ্ছো বুকের উঠোন, চোখের শিথান।

এরপর যেদিন তুমি গেলে, সেদিন জানলাম ভেতরে ভেতরে আমি মরে গেছি, গলে পুড়ে মিশে গ্যাছি। আমি জানলাম আমার কোনও পৃথিবী ছিলোনা, আকাশ ছিলোনা, স্বপ্ন ছিলোনা। ছিলো কেবল তোমাতে কেন্দ্রিভূত সত্তা এক।
এই ঈশ্বরের পৃথিবীতে আমিতো কেবোলই চেয়েছিলাম ভালোবাসা , ব্যাস এর বেশি কিছু চাওয়ার দরকার পড়েনি। তোমাদের পায়ের চাপে সবুজ যে ঘাস , হলুদাভ রঙ নিয়ে মারা যাচ্ছে , তার কেবলই একটু ভালোবাসাই দরকার ছিলো, দরকার ছিলো তোমার বুকে খানিক আশ্রয় যেখানে মাথা রেখে , কান পেতে তোমার হৃদস্পন্দন শোনা যায়। অথচ কি তীব্র অনীহায় অভিযোগ বাক্স ভরে যাবার পরেও ফেলে যাচ্ছো অভিযোগ! কেবল জিতে যেতে চাও। এভাবে জেতা যায়না, আমিতো জিতে গিয়েই হেরে গেছি সেদিন, যেদিন বুকের হাট করে খুলে রাখা দরোজা দিয়ে তুমি....

আমি তো জিতে গেছি সব হারিয়ে তখনই, যখন
 তোমাদের শব্দে বাঁচা খাঁচার পৃথিবীতে মাই এইম ইন লাইফরচনায় এইযে আমি বারবার এ জার্নি বাই বোটলিখে গেছি  তুমি এবং তোমরা কখনওই বোঝোনি।

অচল জীবন

সার্কাসের রিঙ মাষ্টারের মতোন
দড়ির উপর দিয় হেঁটে যাওয়া জীবন থেকে
শ্রান্ত দেহ এলিয়ে দেয়া সবুজ চুরী হয়ে যায়।
চুরী যাওয়া সবুজের অবুঝ বেদনাবোধ
আচ্ছন্ন করে রাখে, তাই
আমি শুয়ে থাকি, শুয়ে শুয়ে আকাশ দেখি।
দেখি জাতিস্মর আমার মুখচ্ছবি।
দেখি মস্ত নীল আকাশে, তীব্র জোনাকীর
আঘাতে একদা মৃত্যুবরন করা আমি জেগে উঠি।
আমি জেগে উঠি, মৃত্যুর দ্বিতীয় বছরেইধ্বংসস্তুপ
থেকে ডানা ঝাপটাই,
যে নো ফিনিক্স পাখি এক।
যে নো সুবোধ পান্ডুলিপির একটা সিনেমা বানাবো চলচ্চিত্রের
ফার্স্ট ডে শো!!

নাকে লাল বল ঝুলিয়ে হেঁটে বেড়ানো ক্লাউন ছিলো যে,
নিস্তরঙ্গ ঢেউ চেপে, ক্লান্ত প্রানে হেঁটে যায়।
বড় হোয়ে যায় অস্তিত্ব থেকে নিঃশ্বাস।
যে কিনা একটা সবুজ হারিয়ে ফেলায় কখনওই জীবনে ফেরেনি আর!
যে কিনা সিগমুন্ড ফ্রয়েডকে ঝুলিয়ে রেখেছে শশাঙ্ক মিলনায়তনে সদর দরোজায়।
যে কিনা প্রস্তাব রেখেছে দশ বাই ছয় পতাকায় লাল বাড়িয়ে দেবার।
সব থেমে যায়,
অহেতুক কোলাহলে নির্জনতা,
নিস্তব্ধতার আছড়ে পড়া শুনশান নীরবতা,
একটা, একটা তীব্র বিষন্নতাবোধ ভর করে বেচে থাকা ফড়িঙের চোখে
টুপ নেমে আসা গাল বেয়ে এক একটা ফোঁটায়
কোথাও কোনও যাত্রাবিরতী হয়না।
থেমে যায়না অচল জীবন।।

আবহাওয়া অধিদপ্তর

আবহাওয়া অধিদপ্তর বোলেছিলো আজ বৃষ্টি নামবে।
তবুও , তবুও ঠান্ডা হোয়ে আসছে শরীর।
নেমে যাচ্ছে তাপমাত্রা,
ভারী হয়ে উঠছে চোখের পাতা,
মাথার পাশে থাকা বড় স্কোরবোর্ডটায় সব
সবুজ হচ্ছে, সরল রেখায় যাচ্ছে স্পন্দন।
চুরী যাওয়া সবুজ ধীরে ধীরে স্থির হচ্ছে।
ঠোঁটে হাসি ফুঁটে ওঠে,
বুকটা কেমন মোচর দিয়ে ওঠে,
হাসপাতালের ফিনাইলের গন্ধের বদলে
আমি পেতে থাকি তোমার নাভিফুলের গন্ধ,
আমি একা ঘরে ঘুমুতে পারিনা জানবার পরেও
তোমার অস্বাস্থকর চলে যাওয়ার মিথ্যের গন্ধ
ভাসতে থাকে ইতিউতি।
আমি হাত বাড়াই,
আমি হাত বাড়াই প্রিয়তমা,
আমি হাত বাড়িয়ে থামাতে চাই,
আমি বলতে চাই একা আমার ভয় করে খুব।
আমি হাত .......
শেষদৃশ্যে স্লথ হয়ে আসে সব।
মৃত্যুর ঠিক দশ সেকেন্ড আগে একটা পাখি
হঠাৎ প্রজাপতি হয়ে যায়।
রঙবেরঙের ডানায় উড়তে.....
ধীরে, জন্মের থেকেও ধীরে পর্দা নামতে থাকা পৃথিবীর যোণীগহ্বরে
প্রতিদিনের গড় মৃত্যুতালিকায় ঢুকে যায় একজন প্রেমিক।

পাখি

পাখি হতে চাওয়া জীবনটায় দুপুর একটা
ক্ষনস্থায়ী দুপুর ছাড়া কিছুই দেখা হয়নি আমার!

কবিতা আঠারো প্যারিস দুইহাজার পনেরোঃ

পাখি হবার ইচ্ছেতে তোমার উড়োজাহাজ মনটাকে আকাশ ভেবেছিলাম।
কিছুদূর যাবার পর বুঝলাম দিকভ্রান্ত জাহাজে সওয়ার,আমি।
অতঃপর ডানা ছেটে জাহাজি হলাম।
একলা একা বৃদ্ধ জাহাজি।
তুমি এখন আমার ডানায় প্রজাপতি, উড়ছো একা একাই বন্দী খাঁচায়।
মনুষ্যালয় আজ দেবালয়ে রুপান্তরিত!
সত্যগুলো প্রথাগত সংবাদ বানিয়ে পরিবেশনের জন্য

উঠছে রক্ত আর অক্টোবর এর শেষ চিঠিতে...

তবুও লিখতে হবে!!
আমি আজ কি লিখবো?
কি ই বা লিখার আছে বলুনতো?
কে ই বা শুনবে কথা আমার?
আমি তো জেরুজালেম এর বিরুদ্ধে বলবো?
আধুনিক এসাইলাম সিকার গোষ্ঠি আবার তা নিতে পারেনা,
যারা নাকি মানবতার দূত আজকাল!
শালা, স্বৈরাচারও তো দূতই!!
কেবল পার্থক্য-
তারা ২৩০ ডলার ভাতা পায়!

আমিতো বুর্জোয়াবাদের বিরুদ্ধে বলবো।
আমি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বলবো।
আমি সেই অস্ত্র,
সেই মারণাস্ত্রের বিরুদ্ধে বলবো যাকে তুমি মডারেট ধর্ম বলো।
যেখানে তুমি ভুল ব্যাখ্যায় লেলিয়ে দাও ঘৃণা এবং ধ্বংসযজ্ঞ হয় আমার ঘর।

তুমি পেট্রো ডলারে রিগায় অথবা লিওতে বসে লাল লিপষ্টিকে।
অথবা  সুইস বর্ডারের ইউএন অংশের হাটবাজারে
১৫ বছরের আরব কিশোরী হাতাচ্ছো!
আচ্ছা কোথায় ছিলে বলোতো?
যখন রাতে, হঠাত রাতে কসাভোর জেনারেল হাসপাতালে
৪৩৮ জন কে গুলি করে মারা হয়?
যখন নার্স, হ্যা নার্স যাকে তুমি নাইটেংগেল বলো।
তাদের শরীরের লজ্জ্বা স্থান গুলোকে ছিন্নভিন্ন করে,
দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখা হয়,
একেকটা সাদা কাগজে লিখে রাখা হয় প্রতিটি অংগের সামরিক প্রতিশব্দ!
তখন কি তুমি ব্রাসেলস এর কোনো পানশালায়?

তুমি সব কিছুর খবর রাখো অথচ ভুলে যাও
১৯৭২, মিউনিখ।
ভুলে যাও,
১৯৬৬,বৈরুত।
ভুলে যাও,
১৯৭১,বাংলাদেশ।
ভুলে যাও,
১৯৯৫,যুগোস্লাভিয়া।
ভুলে যাও স অ ব।
১৯৯৭,চেচনিয়া।
ইরাক,আফগানিস্তান তো কেবল হলো।

হ্যাহ!! বোকাচণ্ডী আমি,
আমি বলতে এসেছি সেই পররাষ্ট্রনীতির বিরুদ্ধে কথা যা যুদ্ধনীতি নামে পরিচিত।
প্রতিটি অঞ্চলে যুদ্ধ বাধিয়ে নাকি কান্নার মচ্ছব তোমার;
এবার কি থামবে?
এবার তুমি আক্রান্ত প্যারিস,
এবার তোমার সন্তান নিপিড়িত,
এবার তুমি রক্তস্নাত,
এবার বলে ক্যানো দিচ্ছোনা তোমার নারী বাজার,
তোমার বুদাপেস্ট এর টোনা ফিশ,
তোমার লেবানিজ হাশিশ,
তোমার আফগানি পয়েন্ট ৫ কোকেইন,
তোমার রবীবারের মেগাবেট,
ঘোড়াদৌড় সব যার হাতে,
যার হাতে তুমি আর তোমার ভংগুর অর্থনীতির প্রভু।
সেই প্রিয় নগরী জেরুজালেম ৩ দিন আগে,
বিভৎস শুক্রবারের ৩দিন আগে কি হুমকি দিয়েছিলো?

নাকি ভুলে গ্যাছো পরমাত্মীয় এর অভিমান ভেবে!
নাকি ধর্ম ব্যবহার করে তুমিও ভাবছো--
"রোটি-কাপড়া-মাকান অঊর ক্যায়া চাহিয়ে জনাব"

বিষাদ

আমি কখনও বিষাদ লিখিনি” ,
লিখতে চাইনি স্বজ্ঞানে ফুলস্কেপ কাগজটায় একাকীত্ব”, কখনো।
আমি কখনো বেভুল সময়েও লিখতে চাইনি মৃত্যু

অথচ বাষ্পীভূত বেদনা,
বুকের খাঁচায় আটকে গিয়ে কুয়াশায় যে বিভ্রম তৈরী করে,
যে তমসাচ্ছন্ন অন্ধকার নির্মাণ করে-
কাকতাড়ুয়া হয়ে সে সকল ব্যধিবোধ সরাতে সরাতে
নিরাপরাধ এক দেয়াশলাই জ্বলে উঠতেই দ্যাখি,
আত্মঘাতি হৃদয় তোমার চোখ-চশমার কাঁচে
ভালোবাসালিখতে গিয়ে লিখে ফেলেছে সন্ধ্যা,
লিখে ফেলেছে ভালোবাসাহীন আকাশে বিলুপ্তপ্রায় লাল গোলাপ,
লিখে ফেলেছে অণুমোদনহীন মর্গে পড়ে থাকা বিশ্বাস,
লিখে ফেলেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত লাল টিপ- যা  বাঁয়ে একটু বেশিই হেলে গ্যাছে!

ফিরতেই হয়

"তোমাকে ফিরতেই হবে,
স্নানঘরের জানলায় লেগে থাকা আকাশের সীমান্ত উচ্ছেদে।
তোমাকে ফিরতেই হবে সন্ধ্যা লাগা চোখটায় আলো জ্বালতে।
তোমাকে ফিরতেই হবে মেঘেদের বুকে পাখির ডানায় লেগে থাকা দাগে।
পাখির ডানায় লেগে থাকা দাগে; কোনও দাগ থাকেনা।

বাড়ি

বাড়ি ফিরছি প্রথাগতভাবেই। রাত পৌনে দুই। শহর ঢুলু ঢুলু চোখে তন্দ্রাচ্ছন্ন। অনেকগুলো বাড়িতে বাতি জ্বলছে সাপ্তাহিক যৌণতায়।  আমি পরিসংখ্যানবিদ হলে বের করে দিতে পারতাম বৃহঃরাতে ভালোবাসাহীন সঙ্গমে থাকা দম্পতীদের সংখ্যাটা।  রিকশায় কেমন ধ্যানমগ্নতায় আবিস্কার করলাম আমি পিছিয়ে এনেছি সময়??
তখন আমি বৃহঃপতিবার সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরি।  এই বাড়ি ফেরা বিষয়ক নষ্টালজিয়া থেকে বেরোবার পথ কি?
আমার ভেতরে কেউ জেগে ওঠে, হঠাৎ নাইটগার্ডের বাঁশি। আমার কুকুরগুলো গন্ধ পেয়ে দৌড়ে আসে। সূচনা কমিউনিটি সেন্টারের উল্টোপাশে পুলিশ চেকপোষ্টে থাকা এস.আই এগিয়ে এসে লাইটারে স্পার্ক করায় বুঝি সিগারেট ঠোঁটে অথচ আগুন নেই! আমি কুকুরগুলোর কুশল জানতে চাই। ওরা একে একে কথা বলতে থাকে আর অন্ধকার কাটা পড়ে যায় দূরন্ত ট্রেনে যার ভেতর অনেককাল আগের প্রেমিক মুখ আবছা আবছা উকি দেয়।
এইসব কথা কুকুরগুলোকে বলছি?
এস আই সাহেব , চা খাওয়াবেন?

চা খেতে খেতে তাকে কেবোল বলি, এইসব কথা অবিচারে জমছে। বাড়ছে চাপ, বাড়ছে ওজন। প্রতিরাতে বুকের ভেতর শশ্মানশোক। শশ্মান শোক এলে তাকে তো চিতায় উঠাতেই হয়। আগুন দিতেই হয়। জ্বলন্ত বুকের চিতার আগুন থেকে ভালোবাসার সিগারেট ধরাই। ধরিয়ে  হাঁটতে থাকলে নিজেকে হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা আর প্রেমিকাকে মেয়র মনে হয়।
আর এইসব কথা আপনাদের শব্দহীন চার দেয়াল শুনতে চায়না বোলে মনোযোগি ছাত্রদের শোনাই।
ওহ রাত অনেক হলো এখনও অনেকদূর যেতে হবে.....

আমি এগুতে থাকি, পেছনে থাকা নীল পোষাকের ভদ্রলোক কি মনে করলো বিদায় না নেয়ায় জানিনা।
উনাকে বলা হয়নি বিদায় শব্দটাকে আমি সকল অভিধান থেকে ভালোবাসার মতন মুছে দিয়েছি।

মেঘের  মেয়ে

তোমার দু-অক্ষরের নামটাই অদ্ভুত
"মেঘের মেয়ে".....
যেনো কুয়াশায় ভেজা ঘাসে রোদের
ইচ্ছেতে আগুন জেগে থাকে, একলা একা।

উইং

রোজকার মতন আমি পালটে ফেলি গতিপথ,
কোথাও উকি মারা হয়না অথচ হৃদয়বৃত্তান্তের তদন্ত থেমে আছে।
নিজের সাথে মিথ্যেবাদিতায় গোয়েন্দা সদর দফতরকে বিদায়ী
সম্ভাষণ জানিয়েই ছুটে যাই,
পেরিয়ে যাই শেষ হার্ডল।
হাটু গেড়ে বসে পড়ি ঠোঁট চলচ্চিত্রের শেষদৃশ্যে।
আমার বুকটাকে ছিঁড়েখুঁড়ে ঢুকে যাক মৃত্যু,
অনন্ত সূর্যাস্তের মতন উঠে থাক আমার রানওয়েতে।

রানওয়ে

চোখের ভেতর উদাসীন বিশ্বাসী কষ্ট রিপু করা সময়ে
আমি অস্থিরসংকল্প এক।
হাসফাসের সংগমে কাঁচের বোতলে কুয়াশা
জমতে দ্যাখি,শুধু।
গ্রীক সভ্যতার ফালিকরা নীলে ভর করা ঈগলে চুরী হয়,
ধর্ষিত হয় লাল পাড়ের সাদা শাড়ি।
বিমানবন্দর সংলগ্ন রেস্তোরাঁয় বসে পরিবর্তন করি
আমার আগতপ্রায় কবিতা।
একটা বোয়িং বিমান, এযেনো আমার মতন সবার মাঝে একা।
দাঁড়িয়ে, স্বপ্ন নেই, ইচ্ছে নেই।
কোথাও যাওয়ার তাড়া নেই?
কেবোল ইচ্ছে মৃত্যুর তীব্র লোভ তাড়া করে,
এখানে -সেখানে -বুকের উঠানে।

আমার তখন তেরো

আমি জানি,আমার তখন ১৩...
আমি জানি,এটা নিশ্চিত জেনেই জানি।
অনেকেই ঘটনা থেকে,
ঘটনার রটনায় মনোযোগী ছাত্র!
আমি জানি,যখন আমি আমার শৈশবের রং হারাচ্ছিলাম তখনকার গল্প।
আমি জানি যখন শিক্ষয়িত্রী কর্তৃক আমি ধর্ষিত হচ্ছিলাম
তখন কোথাও সাইরেন বেজে উঠেনি।
বাজেনি করুন বিউগল
অথবা
নতর্কীর উদ্দাম নৃত্য আমার শরীর উপকুলের,
শব্দহীন কর্পুরে উড়ে যাচ্ছিলো শ'বে!
কারন নারী মাত্রই ধর্ষিতা!
ধর্ষক!! হয়ত কখনওই নয়!

আমি জানি,কিভাবে আকাশ বারান্দায় নামে?
আমি জানি,সন্ধ্যেটা কখন চোখের পাতায়?
আমি জানি,নরকের মেঘ মাথায় নিয়ে কিভাবে তুমি যুদ্ধাগ্রস্ত?
আমি জানি,এ শহরের কোন কোন ঘরে ঈশ্বরের যাতায়াত?
আমি জানি,তিনি অবৈধ কোথায়?

রেডিওতে চলছে দিনিবদলের গান,
মুষ্টিমেয় উন্নয়ন,
অরাজকতার শ্রেণীবিন্যাস,
আমি জানি,নারী তুমি বড্ড ক্ষুধার্ত।
পিপাসার্ত তুমি রক্ত উপাসনায়!
আমি এও জানি,
তুমি পেছনে ফিরে তাকাবেনা,
আমি জানি, তাকালেই তুমি বন্দী;আমার চোখে।
আমার নখে,
ঠোটে,
বুকে,
অথবা
আমাদের অতীতের সিড়িঘরে।

আমি জানি, আমি মরতে শিখে গ্যাছি রোজকার নিয়মে।
আমি জানি,তখন আমি ২৩..
আমি জানি,দুঃস্পর্শ রাত্রিতে হয়ত আমি ৩০...

হয়ত,
আমি জানি, ১৩ বা ২৩ অথবা ৩০ যা'ই হউক না ক্যানো?
পুরুষ কখনওই ধর্ষিত নয়,তোমার টি.আর.পি সময়ে।
কিংবা
হয়ত
পুরুষ,মানুষই নয় অথবা ছিলোই না।

এবং আমি জানি,২০১৫ তে টিভিতে এক শোকাবহ স্যাটায়ার!
যেখানে মৃত আত্মায়..গুলি চলছে।

তিন টাকার জীবন

অফিসের নয়তলার উইন্ডোগ্লাস ঘোলাটে হয়ে উঠছে। বুকের ভেতর ফাঁকা ক্ষ্যাপাটে অনুভূতি নিকোটিনের তুচ্ছতায়,শুন্যস্থান পুরন করার সময়টায় হঠাৎ ঘুরপাক খেতে থাকি হারানো দিনরাত্রির হিসাবে।।
আচ্ছা কেমন আছো তুমি? হাহ্।।
--একটা তীব্র প্রেমের কবিতা লিখে দাও।বিকেলটাতে একটা প্রেমের কবিতা, চাইতেই পারি। তাই না।।
--পারছিনা, অস্থির সময়ে, হামাগুড়ি দেয়া যাপিত জীবনে কিছুই তো লিখতে পারছিনা।।
--চেষ্টা করেছিলে, লেখার! তীব্র চেষ্টা, যেমন তীব্রতা ছিলো একটা রুমাল কিনে আনতে গিয়ে দুঘন্টা বৃষ্টিতে ভেজায়। যে তীব্রতা দেখতাম মুখে-চোখে তোমার প্রতি শনিবার, বৃহস্পতিবারের অপেক্ষায়।।
--তীব্রতা শব্দটা ফিকে হয়ে গ্যাছে, একটা প্রেমের কবিতা, একটা সুখি মানচিত্রের আকাশে স্বাধীন পাখি লিখতে চেয়ে না পেরে। ছুটে বেড়ানো রাতগুলোর ভোর হওয়া দেখতে থাকা ক্লান্তিতে নুয়ে পড়া শব্দরা জানে, আজ কতটা অসহ্য অসহায়ত্ব নিয়ে বেঁচে আছি ব্যর্থতায়, মেঘের মেয়ে। কেবোল ওরা জানে।।
--এসো, এসো আমায় ছুঁয়ে দাও। কোল পাতলাম, মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে একটু ছুটি নাও রুটিন জীবন থেকে। দেখবে, দেখবে সব ঠিক হয়ে গ্যাছে। দেখবে শব্দগুলো আবার, আবার স্বাধীনতা দিবসের মার্চপাষ্টের অহংকারী মুখ হয়ে লিখা হচ্ছে কবিতার খাতায়।।
--মেঘের মেয়ে ,কবিতা আমার ৯-৫টা সরকারী এসেম্বলি নয়। কবিতা, কবিতা কি জানিনা? ঠিক তোমাকে কতটা ভালোবাসি? প্রশ্নটার উত্তর লিখতে যেভাবে ব্যর্থ আমি ঠিক তেমন ভাবেই আমি জানিনা কবিতা কি? তবে রুটিন নয়।।
--আমি জানি।।
--কি জানো?

--জানি, তুমি কবিতায় আমায় লিখো, সময়কে লিখো, লিখো অবিন্যস্ত শব্দে দেশ।তুমি লিখো মেঘ, যে মেঘে আমি আছি। লিখো শহর, যেখানে আমাদের দেখা নেই হাজার চুরাশি দিন।তোমার শব্দেরা আওয়াজ করে প্রচন্ড, তুমি কবিতায় মিথ্যে বলতে পারোনা বলে। এককথায় তুমি কবিতা খাও, কবিতায় জাগো, ঘুমাও সেখানেই।তীব্র আক্ষেপে, ক্রোধে তুমি কবিতায় ভাঙ্গতে চাও নোংরা লোহার গেইট।এজন্য কবিতার দেখনদারি প্রতিনিধি মিছিলে অপাঙতেয় তুমি। তুমি অচ্ছ্যুৎ উত্তরের ক্লাব পাড়ায়, যেখানে নির্ধারিত হয় আগামী পুরস্কার কারা পাচ্ছে? তোমার খেদ নেই, প্রত্যাশা নেই, ইচ্ছে কেবোল লিখে যাবার। শোনও সিগারেট ধরিয়োনা, শেষ করেই যাবো আমি। পাগলতুমি কবিতায় বাঁচো কিনা জানিনা, তবে মারা যাও নিশ্চিত আর আমিই বিধবা হই প্রতি শব্দে।

SHARE THIS

Author: