❑ সার্কাস
ভাষারে আমি নামায়ে আনি সাধারণ
কাতারে
ভাষারে আবার তুলেও ফেলি অভিজাত
রাজসভায়
হায় মহাত্মা, তুমি বুঝলা না
ভাষারে নিয়া আমি লারেলাপ্পা খেলি।
❑ প্রশ্ন
ফুলও জানে বহু রক্তপাতের কাহিনী
জানে, দেবীদের ছল- ফুলদানীতে আঁকা আখিলেস
ও হেক্তোরের বর্শাযুদ্ধ; আথেনার ছায়াভরা প্রলোভন
আমি মাটির ফলক ধরে প্রাচীন হেঁটে যাই
কায়া; ভেনাসের দেখা পেলে জিজ্ঞাসা করতাম-
পূজারীর সাথে কখনো বিছানায় গিয়েছিল কি না।
❑ চৈত্রের কবিতা ৫
ঘুমের ভেতর টের পাই
বাড়িতে চিনির বৈয়াম খালি
বাড়িতে চিনির বৈয়াম খালি
সমুদ্রে ডুব দিয়ে অতঃপর
কিছুটা লবন তুলে আনি।
কিছুটা লবন তুলে আনি।
❑ প্রেম
প্রতিটি মাস্টারবেশনে মনে হয় —
শরীর থেকে স্খলিত হয়ে যায়
আমার পাপ; বিষণ্ণতা- শাদা শাদা
এতো যে পাপ ফেলে দিচ্ছি প্রতিদিন;
পাপ তো কমছে না! বরং গাঢ় —
ম্যাডাম,আপনার ক্লাসের আমি
এক কুলাঙ্গার ছাত্র।
প্রতিটি মাস্টারবেশনে মনে হয় —
শরীর থেকে স্খলিত হয়ে যায়
আমার পাপ; বিষণ্ণতা- শাদা শাদা
এতো যে পাপ ফেলে দিচ্ছি প্রতিদিন;
পাপ তো কমছে না! বরং গাঢ় —
ম্যাডাম,আপনার ক্লাসের আমি
এক কুলাঙ্গার ছাত্র।
❑ বিগত জন্ম থেকে
বৃষ্টির ছটায় ভিজে যায় তিন ভ্রাতার মুখ।
আমি, আমি আর সে। কারা? গড়িয়ে
গড়িয়ে আয়নার
অনুরুপ। অথচ স্বতন্ত্র। বৃষ্টিতে তিন ভ্রাতা বেমালুম
অনুরুপ। অথচ স্বতন্ত্র। বৃষ্টিতে তিন ভ্রাতা বেমালুম
বধির ও মুক।
আমরা এগিয়ে নিয়ে যাই ভারী গোলক
ধরাধরি করে নিই হাতভর্তি সিন্দুক। ভেজা। অচলমুদ্রার
নাচ রক্তের ভেতরে নাচে। একজন হাঁটু ভেঙে
গেলে খোঁড়া হবার অভিনয় করি। একজন ভস্ম হলে
আমি আমারে অস্বীকার করি।
ধরাধরি করে নিই হাতভর্তি সিন্দুক। ভেজা। অচলমুদ্রার
নাচ রক্তের ভেতরে নাচে। একজন হাঁটু ভেঙে
গেলে খোঁড়া হবার অভিনয় করি। একজন ভস্ম হলে
আমি আমারে অস্বীকার করি।
আমাদের পায়ে মূলত খুব। আমাদের পায়ে মূলত খুর।
যেভাবে মেঝেতে ঘোড়া শব্দ। টকর টকর টকর টক।
আমাদের কান থেকে রক্ত। গড়িয়ে গড়িয়ে
অনুরূপ। অথচ আলাদা, স্বতন্ত্র।
অনুরূপ। অথচ আলাদা, স্বতন্ত্র।
ভবিষ্যতের দিকে ভাষা, অতীতে ছিলাম মৃত।
❑ ছেলেমানুষি
আমার মন জলে নাইমা পড়ে। হামাগুড়ি দেয়। মন আমার সাঁতার কাটে, খাড়ির দিকে যায়। মাঝে মধ্যে নৌকা আসে, বৈশাখের হইলদা দুপুরে। লাল ঠোঁটে মাঝি পান খায়। নতুন বউ বড় বড় চক্ষে তাকায়। পহেলা বৈশাখে মেঘ নাই আকাশে। মন আমার মেলার দিকে যায়। মন আমার আনচান আনচান ঘুইরা বেড়ায়। আমার মন এক ছোট পোলা, ডুগডুগি হাতে লইয়া বাপের লগে হাঁটে। আমার মন এক ছোট কন্যা, বেণী দুলাই দুলাই বাপের লগে হাঁটে।
❑ চৈত্রের কবিতা ৩
আমার মাথার ভিতর গাছ
সেই গাছটির অনেক শাখা
শাখার ওপর প্রজাপতিটি
প্রজাপতিটির ভিতর ডানা —
সেই প্রজাপতি উইড়া গেলে
আমার বুকটা করলো খাঁ খাঁ
সেই গাছটির অনেক শাখা
শাখার ওপর প্রজাপতিটি
প্রজাপতিটির ভিতর ডানা —
সেই প্রজাপতি উইড়া গেলে
আমার বুকটা করলো খাঁ খাঁ
❑ শিকারি
কাটি এক গাছ আমি, কাঠের
জন্য
কাঠ কাটি ভালো এক ধনুক বানাবো
ধনুক বানাবো আমি, তারপর তীর
মাটির উঠোনে বসে ছায়া সুনিবিড়
কার্তিক রাতে বুঝি, গোল চাঁদ ওঠে
পুকুরের জলে তার আলো এসে পড়ে
চাঁদের শিকারে আমি মাঠে যাব চলে
ধানক্ষেতে সারারাত জোনাকিরা ওড়ে।
কাঠ কাটি ভালো এক ধনুক বানাবো
ধনুক বানাবো আমি, তারপর তীর
মাটির উঠোনে বসে ছায়া সুনিবিড়
কার্তিক রাতে বুঝি, গোল চাঁদ ওঠে
পুকুরের জলে তার আলো এসে পড়ে
চাঁদের শিকারে আমি মাঠে যাব চলে
ধানক্ষেতে সারারাত জোনাকিরা ওড়ে।
❑
ছবিটা
সাদাকালো দিন সাদাকালো বায়োস্কোপের
মতোই। ভালো লাগে তারে।
মতোই। ভালো লাগে তারে।
সাদাকালো দিন কীভাবে?
যেমন আকাশে অনেক মেঘ, সূর্য টুর্য নাই
পুকুরের জল স্থির, গাছের পাতা নড়েনাই
ভ্যাপসা গরম
না হয়
শীত
কিছুটা ধোঁয়াটে
লাগতেও পারে
কিছু পাখি কিচিরমিচির
কিছু পাখি উড়ে বেড়ায়
গাছ থেকে গাছে
এইসব টুকটাক
আরকি
সাদাকালো দিনের মত লাগে।
যেমন আকাশে অনেক মেঘ, সূর্য টুর্য নাই
পুকুরের জল স্থির, গাছের পাতা নড়েনাই
ভ্যাপসা গরম
না হয়
শীত
কিছুটা ধোঁয়াটে
লাগতেও পারে
কিছু পাখি কিচিরমিচির
কিছু পাখি উড়ে বেড়ায়
গাছ থেকে গাছে
এইসব টুকটাক
আরকি
সাদাকালো দিনের মত লাগে।
❑ চৈত্রের কবিতা ৭
এরকম রাত বড়কালে খুব একটা আসে না
ছোটকালে ছিলো দুই এক বার, দেখা যায় ভালো
যায় না আবার; বুঝাও যায় না, সব বুঝা যায়
ছোটকালে ছিলো দুই এক বার, দেখা যায় ভালো
যায় না আবার; বুঝাও যায় না, সব বুঝা যায়
বিদ্যুত নাই, হ্যারিকেন আলো, মন টন ঠিক বসে
না
ঘুটঘুটা রাতে, একা আন্ধার সব সরাইলো জ্যোৎস্না —
কারে ডাক দিব? দেবাশিস, নাকি শুভাশিস? বেলী
গাছ তলে দেখা যাইতেছে কোন ভাইয়ের ছায়া?
এতো ঘ্রাণ আসে! ফুলের গন্ধে নাকি সাপ আসে
খুব খেলা করি; রাস্তায় কারা হাঁটে মেয়েলোক?
ফরসা আলোয় ভাইসা ভাইসা কোনদিকে যায়?
ঘুটঘুটা রাতে, একা আন্ধার সব সরাইলো জ্যোৎস্না —
কারে ডাক দিব? দেবাশিস, নাকি শুভাশিস? বেলী
গাছ তলে দেখা যাইতেছে কোন ভাইয়ের ছায়া?
এতো ঘ্রাণ আসে! ফুলের গন্ধে নাকি সাপ আসে
খুব খেলা করি; রাস্তায় কারা হাঁটে মেয়েলোক?
ফরসা আলোয় ভাইসা ভাইসা কোনদিকে যায়?
চাঁদে তাকাইলে চড়কা বুড়ির কথা মনে হয় —
দেখি অদ্ভুত এক গাছ, বড় এক জাদুগাছ
আর সুমিষ্ট শাদা প্রান্তর; শাদা শুধু শাদা
বৃক্ষের তলে বৃদ্ধা চড়কা কাটে, চুল তার পাকা;
বিড়বিড় করে— সে রাগ হইলে আপদ বিপদ
সারা রাত ধরে তার নিচে মোরা করতেছি খেলা
আর সুমিষ্ট শাদা প্রান্তর; শাদা শুধু শাদা
বৃক্ষের তলে বৃদ্ধা চড়কা কাটে, চুল তার পাকা;
বিড়বিড় করে— সে রাগ হইলে আপদ বিপদ
সারা রাত ধরে তার নিচে মোরা করতেছি খেলা
এরকম রাতে মোরা আজীবন খেলাই করবো
আকাশের নিচে মোরা আজীবন ছোটই থাকবো
আমরা থাকবো ছোট আমাদের মাথার ভিতর
যতদিন আছি বাইচা, এমন স্মৃতি-টৃতি নিয়া
খেলাছলে মোরা শুধু চারিদিকে ছুইটা বেড়াবো।
আকাশের নিচে মোরা আজীবন ছোটই থাকবো
আমরা থাকবো ছোট আমাদের মাথার ভিতর
যতদিন আছি বাইচা, এমন স্মৃতি-টৃতি নিয়া
খেলাছলে মোরা শুধু চারিদিকে ছুইটা বেড়াবো।