রাকিবুল হায়দার'র যুগল কবিতা











আমি ছুঁয়ে দিলে


আমি ছুঁয়ে দিলে এভাবেই বদলে যাবে তোমার দিনলিপি,
স্নানঘরে আর সহজেই নগ্ন হয়ে দাঁড়াবেনা তুমি,
লজ্জায় আড়ষ্ট হয়ে, শরীরে জড়িয়ে নেবে সাদা তোয়ালে।
যেকোনো রিকশার ডানপাশে আমার অস্তিত্ব চিরস্থায়ী হবে,
তোমার আয়নায়, তোমার দেয়ালে অন্তর্ভুক্ত ছায়ায়,
আমার অবয়ব তোমাকে বারবার দখলে নেবে।
একাকীত্ব আর কোনদিন ছোঁবেনা তোমায়,
বরং অশরীরী হয়ে আমার অস্তিত্ব তোমাকে ঘিরে থাকবে।
তোমার চোখ বারবার মুঠোফোনে চলে যাবে,
মনে হবে, এই বুঝি সশব্দে বেজে উঠলাম আমি!
মুহূর্তে মুহূর্তে অভিমান হবে তোমার,
গতকাল দেখা হয়নি বলে, আজ এই সন্ধ্যাতে মুখোমুখি বসেও-
ভীষণ কান্না পাবে তোমার।
আমি ছুঁয়ে দিলে এভাবেই বদলে যাবে সব,
বিবর্তনবাদের নতুন এক সূত্র লেখা হবে,
নিমিষেই তুমি তরুণী থেকে আপাদমস্তক একজন নারী হয়ে উঠবে।



বাড়ি ফেরা হয়নি


পারমিতা, তোমাকে নতুন করে আর কি বলার থাকতে পারে।
শুধু বয়সটা বেড়েছে এই কথাটুকুই জানাবার ছিলো,
স্মৃতির কোষগুলো বাতাসে মৃত গোলাপের পাপড়ির মতো ঝরে পরে,
ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যায় শহরের কতশত ধুলোমাখা রাস্তায়।
সেদিন সন্ধ্যায় কফির কাপে শেষ চুমুকটাই মনে আছে আমার,
বাকি সব ধোঁয়াটে বিবশ এক বিস্মৃতির অন্তরালে হারিয়েছে।
তোমার আঙ্গুলে ঝলমল করে উঠেছিলো যে অঙ্গুরি,
তার ভাঁজে লেখা ছিলো আমার মৃত্যু পরোয়ানা।
পারমিতা, সেদিন সন্ধ্যায় আমার অস্বাভাবিকভাবে খুব স্বাভাবিক থাকা,
প্রতিদিনের অভ্যাসে তোমাকে রিকশার দরদামে জিতিয়ে দেওয়া,
তোমার চলে যাওয়ার রাস্তায় নিস্পলক তাকিয়ে থাকা পর্যন্ত, তুমি জানো।
বাকিটুকু জানতে পারোনি অথবা কেউ তোমাকে জানায়নি,
সেদিন সন্ধ্যার ফুটপাত হাতড়ে এখনো তুমি কিছু জলকণা খুঁজে পাবে,
এতগুলো দিনের পরেও, সেই সমুদ্র শুকায়নি কোথাও।
পারমিতা, তুমি দাবী করেছো এই আমি বেঁচে আছি এখনো,
আমাকে মাঝরাতে শহরের রাস্তায় হেঁটে যেতে দেখেছে নৈশপ্রহরী,
খদ্দের ভেবে এগিয়ে এসেছে কতশত নিশিবালিকা,
জানি, আমার সব খবরই তুমি রাখতে,
ইথারে লুকানো ছিলো, তোমার গুপ্তচর!
সবই ঠিক আছে, ওরা মিথ্যে বলেনি একবিন্দু,
শুধু যে সত্যটুকু তোমাকে জানায়নি ওরা,
তা হলো, ঐ সন্ধ্যার পর আমি আর কোনদিন বাড়ি ফিরিনি।


SHARE THIS

Author: