খন্দকার নাহিদ হোসেন এর কাব্যগ্রন্থ রাক্ষস প্রণীত পাঠ থেকে কবিতা

পাণ্ডুলিপি নিয়ে কিছু বলতে হবে কিন্তু কী বলবো? শেষমেশ তো পাণ্ডুলিপির ভেতরের কবিতারাই তার নিজস্ব কথা। আমি শুধু চেষ্টা করেছি সেইখানে প্রচুর নিঃশব্দ রাখতে...কিছু না বলেই অনেক কিছু বলতে। চেয়েছি সেই জগতটা ধরতে যেখানে ভালবাসাটাই শেষ কথা...যেখানে ভালোবাসা মানে কোথাও ফুটে ওঠা এক প্রতিজ্ঞা... যাপনের রং। কিন্তু কে জানতো সেখানে বেশিরভাগ মানুষই বড় বোকা। তো তাদের মানুষ বললেই যারা ভ্রু কুঁচকে নিজেদের দিকে তাকায়...তাদের চালাক চোখের কথা ভেবেই-ভয়ে ভয়ে বোকাদের রাক্ষস বলে ডাকি। ভাবি থাক-দরকার নাই মানুষ ডাকের...! তো এভাবেই-রাক্ষস প্রণীত পাঠ। তবু যদি হঠাৎ করেই কোন চালাক মানুষ প্রশ্ন করে বসে-তবে কেন এতো নিঃশব্দ? তখন শুধু হেসে বলবো-কারণ নিঃশব্দ হারায় না...


পড়, তোমার প্রভুর নামে

মরে গেলে তবু ফুটে থাকে এক সাপ
মোচড়ে জেরক্স-সাথে চলাচলতির
কোষ
মরে গেলে নাহিদবারের ফণা-স্মৃতি ফোঁস
অতি ফোঁস...

অথচ এদিকে আমি মানে ঘষে দেওয়া
রাবারে রাবারে ভাগ
মুছে যাওয়া মানে কিছুই না-শুধু দাগ
ময়লা রংয়ের দাগ।

কিচ্ছা

সাইকেল পাখির খোসায়
           একরাতে ভালোবাসা থুয়ে
সে চরের দিকে গেলো;
যাওয়ার আগে-আগেই তুমি তারে তামাক সাধলা
জাইলা জাইলা জীবনের ঘাড়ে
...পোষা থাকে-
মাছবিদ্যা

সেইসবও কইলা...
তারে তুমি সোহাগের খুঁট থেকে দিলা
একলা খাইতে মিছা নামেরই ধলা দানা!

তহনও-
হাসি দেখাইয়া তোমারে সে ছোট বানায় না
কয়ও না-হাড় পুড়লে বেবাক ছাই-ই কালা...
                      
   লাভটা কী?
চকচকা আয়নায় সকলেই হাছা লেখে
মাইনা ভাইবা হাছা লেখে! 

তার দেহের ফাটল বড় হয়
ফকফকা রাতে ইস্রাফিলের শিঙার ডরে ভোগে
                    বিড়বিড়াইয়া কাঁপে জ্বর
ভুবন দুইলা ওঠে-দুইলা
ওঠে...

নিঃসঙ্গতা

আগরবাতি বিষণ্ণ হলে-কোন এক মোম রাত ধুয়ে চলে কাঠ। বোকা দুঃখ সমুদ্র ডাকে। স্নাত এক বোতলের কাছে ফেলে রাখে শ্বাস। ছায়া ভিজে যায়...কেউ মেঘ ঢাকো...কেউ জানালা ভেড়াও...

হাত দাও এঁকে...হ্যাঁ, এইখানে। দীর্ঘ ফোঁটা? এই পাশটায় কুয়া। অতলের সুর। আহা-শ্যাওলা ভাবায়...?

ছায়া ভিজে যায়। বোকা দুঃখ সমুদ্র ডাকে...

অনুরোধ

চমৎকার সময়ে...আমি কোন বৃক্ষ হবো সংসারে-
তুমি ভাবো

বলো-ছায়া খুলে ফেলো, আচ্ছা থাক...ঝুঁকে যাও বারান্দার
দিকে...হ্যাঁ
, বাইরে, ওইখানে

জানো-সবচেয়ে ভালো হয়...যদি মরে যাও...মরে যাও!

সার মাখা মাটিতে বাড়িরা শক্ত হয়, বিছানারা কুঁচকায়-
উজ্জ্বল সারস নিয়ে... বৃক্ষ
, তার নিচে অন্ধকারে তোমারেও
কিন্তু রাখি...

সেই সুখে মরে যাও...যদি যাও...জেনো-ভালো হয়!

শুভ আয়াতবর্ষ

দ্রাবিড় মাঠেরা চলে গেলে দানাদার শীত একা
মহিষের রঙ গুলে চলে-আহাকাহা করে
ফলনের বৃক্ষে তাই-একই পিরীতি
দুর্গা
-দুর্গা...!

সিজনের কালে খুব অস্থিরকাব্য সাজায় 
মিথের মাছকালীন ফুল-অজস্র আঙুল
যেন
-বেদনার কোয়েকাফ নগরীতে বসে
কিচ্ছায় লিখছি-ছেলে তুমি আলাদিন হবে;

কপাল-কপাল...?

সেইবার তুষের দুঃখ বলেছিল...ঝগড়ারা গাঢ় হলে গমের অক্ষর ফুটবে-আপেল দেয়ালে। সেই থেকে শুরু হবে ঈষৎ বছরতারপর একদিন, অনেক অনেক আয়ু পর...কেউ লিখবে-‘তিতির সমুদ্রের লগ্ন থেকে ভেসে উঠেছিল-আয়াতের যাদু। কাল সেই দিন। কাল...আয়াত-আয়াত।’

মাত্রা একক চিনলে-এক নাহিদে দূরত্ব কতো
যদি শেখা যায়...তবে বল্লমের কিরা
ব্রোঞ্জের উত্তর ডালে দুইজন-পাশ ফেলই রাখবো
দেখি ড্রিবলিঙে কী ওঠে
-কী ওঠে...! 

পোকাদের জ্বর পাড়ায় ঢুকলে যেমন মানুষ
কার্পাসের কোয়া...ঠিকঠিক সেই ঘ্রাণ
খরার শ্যাওলা-আমাদের মেছো গীত
তবু তিলের ভূগোলে তুমি আমারেই আঁক;


রাক্ষস-রাক্ষস...?

SHARE THIS

Author: