একজন বেদনাপ্রিয় মানুষ
আমাকেই দাও যত ব্যাথা,
যত বেদনা বহুল ধুলোবালি।
যেহেতু দুঃখ ভালোবাসি,
আমাকে দাও ঘূর্ণিঝড়ের প্রত্যেকটি ভয়ানক অন্ধকার
রাত;- দাও চিৎকার কিংবা কান্নায়
ভেঙে পড়া চোখ জোড়া।
যেহেতু দুঃখ ভালোবাসিঃ
পৃথিবীর সব যুবতী নারীগণ ধর্ষিত হোক আমার চোখের
সামনে—সমস্ত শিশুর লাশ আমার
উঠোনেই পড়ে থাক।
শহরের যে কটা পাখি মানুষের মঙ্গল কামনা করে,
তাদের নিষিদ্ধ করা হোক!
এবং এ ব্যাপারে আমাকে অবগত করা হোক সবার আগে!
যেহেতু দুঃখ ভালোবাসি,
আমাকে পাঠিয়ে দেওয়া হোক সে সকল সংগ্রামী
মানুষের কাছে;— যারা এখন পার্কের
বেঞ্চে বসে বাঁশি বাজায়।
আমাকে বুঝিয়ে দেয়া দেওয়া হোক
কতটা যন্ত্রণা নিয়ে এগিয়ে আসে
আমার প্রেমীকার মত বিচিত্র নারী-প্রকৃত যাদের
কেউ আমার পরিচিত নয়!
আমাকে বুঝিয়ে দেয়া হোক—
স্বর্গের সবচে জাঁকজমকপূর্ণ জলসাঘরে আমার
কোমলমতি কন্যা একজন নর্তকী মাত্র।
যেহেতু দুঃখ ভালোবাসি,
আমাকে জানিয়ে দেয়া হোক জন্মের পর আমার পড়ে
থাকার কথা কোনো ডাস্টবিনে;—
যখন কেউ আমাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য অপেক্ষারত
থাকতো।
আমাকে বোঝানো হোক পরিপূর্ণ শোক ও কান্না বিজড়িত
নিঃস্তব্ধতা
শোনানো হোক পবিত্র বেদনার কোরাস।
ত্রিমাত্রিক
রোজ দূরগামী বাস দাড়িয়ে থাকে সুহি;
পথ হারানোর প্রয়োজনে।
জানালার কাচ ভেঙে
রোজ তোমার কপালে যেমন লেগে থাকে নিষ্পাপ
চড়ুইয়ের চঞ্চলতা,
ঠিক তেমনি—
প্রতিদিন অামি অবিষ্কার করি পরিচ্ছন্ন
কোনো শোবার ঘর।
রোজ যতটুকু দুরন্ত আলো হোচট খায় বুকের এপাশে
ওপাশে,
প্রতি চুম্বনে ধোয়ার দিকে ঠেলে দেয় আরো ধোয়া;
আমিও গুম হই ততটা মাদকতায়—
ছবি হয়ে ঝুলে থাকি ফ্রেমে।
এই যে,
কিশোরী দৃশ্যগুলো
একটা..
একটা..
কোরে খুলে দিচ্ছে বুকের গিট;
তাদেরকে মনে রেখো।
তাদেরকে
মনে
রেখো
মাতৃস্নেহে...
তোমার কাছে একটি সন্তানের জন্য এসেছিলাম সুহি ;
এসেছিলাম—
সন্তান হোয়ে...
গোপনে ভালোবাসি ছোট্ট পাখি'কে
গোপনে গোপনে আমি ভালোবাসি এক ছোট পাখিকে।
তার
দাবি নেই কোনো—নেই ক্ষমতার লোভ।
তার অনুমানঃ
প্রেমীকার জন্য নতজানু হোয়ে পড়েছে যে যুবক;—সে মূলত পুষ্টিহীনতায় আক্রান্ত বহুদিন।
সর্বপোরি,
খাদ্যের অভাব চুকে গেলেই নাকি নিশ্চিন্তে ফিরে
যাওয়া যায়
যেকোনো দিকেই।
যে ছোট পাখিটা বেড়ে ওঠে সমস্ত ক্ষুধায়
আমাকে বোলেছে- সবাইকে নিয়ে সে ফিরে যেতে চায়,
যেখানে সর্বস্ব বীরাজ করে প্রেম।
যেখানে
নির্ঘুম সব রাত স্বপ্ন দ্যাখার।
পাশাপাশি দিনগুলোয় যেখানে পেট পুরে খেয়ে
সবাই পড়বে সু-সংবাদে ভরপুর খবরের কাগজ।
সেই ঝলমলে শরীরের পলাতক পাখিটা'কে ভালোবাসি আমি।
প্রিয়তমা...
কাচা রোদরঙা
হলুদ পুচকে পাখিটা ঠিক তোমার মুঠোর মতই শান্ত
আমর সাথে দ্যাখা হবে না
জেনেও যাকে ভালোবাসি গোপনে—
আমার বুক অব্দি সেই পাখি পৌছুবে কবে?
জানো কিছু?
ময়লা জামাটা
আমি ঘর থেকে বেরুলেই
আমার ময়লা জামা'টা একা হোয়ে পড়ে।
জুতোজোড়া অর্ধেক ছেড়া
কিছুদিন পর তারা
চলে যাবে কোথায়
কে জানে!
শুধু ধূলোবালি পড়া জামা'টার কোনো গতি নেই।
এক কাজ কোরো,
কোন পোষাকে তোমার মন গলাবে বলো?
জমাটায় পারো যদি
অন্য একটা শরীর দিও।
শোবে অপরুপা?
আমার সাথে শোবে অপরুপা?
বহুকাল
জেগে আছি
বহু যন্ত্রণায়।
শোকাহত ঝিঝিঁর হৃদয়ে বহুকাল ঘটে গ্যাছে প্রলয়
আগুনের প্রলাপে চোখ জুড়ে ছেয়ে গ্যাছে দীর্ঘ
গ্রীষ্ম
বহুকাল ঘুম হয়নি, ঘুমাইনি বহুকাল..
শোবে অপরুপা?
অন্যমনস্ক তোমার চিবুকের ছোঁয়া
আমাকে নিশ্চিন্ত করে জেনে
সামান্য ঘুমোতে এলাম।
কোথাও একটা দিতে পারো ঠাই;
বুকে,
ঠোঁটে-অথবা জন্মঘ্রাণে।