বাবা
আজো দাঁড়িয়ে আছি-
মাথায় টুপি,অন্তরে প্রার্থনা সাজিয়ে আমি ফিরে যাই কোনো
ভ্রমে
খুব আদর,পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়া জলযান
ভীড়ের মাঝে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া দুশ্চিন্তায় বাবা
হাত খুঁজতেন বিশ্বাসে
আমি দেখছি-
এই যে শীতরাত্রিতে চারিদিকে ওয়াজ শোনা যায়
এক গভীর স্নেহে তিনি আলোচনায় রাখতেন আমার
ভবিষ্যৎ,অজস্র স্বপ্ন
কোলে বসিয়ে শোনানো কবিতায় আমি হেসে উঠতাম সহজেই
আজো দেখতে পাওয়া নক্ষত্রে
শেষ বালিকণার স্পর্শে আমি শক্ত হয়ে যাই
ভালোবাসায়-
বাবার কফিন কাঁধে
সিমেট্রিতে মুষলধারে বৃষ্টি ঝরে যায় দূরবর্তী
কোনো পথিকের পিপাসা মেটাতে,
অথচ বাবা-
তিনি কথা বলছেন না
ঠাণ্ডা পড়ে আসে নিরিবিলি শোকে,
আমি নামিয়ে রাখছি বাবাকে
প্রতিধ্বনি ওঠে আসে ঘুমে-
চোখ চেয়ে থাকে
কুয়াশাচ্ছন্ন কোনো সকালে উনুনের ধারে-
আমি আজো দেখছি
পায়ের উপর পা তুলে বসে আছেন বাবা
মৃত্যুর গান
পেরিয়ে যাওয়া অদ্ভূত কোনো গ্রাম
সুখকর কোনো আঙ্গুলের পরিমাপ
ঝরে পড়ে সব মাছেদের চলাচল
টিকেটে লেখা আমাদের ছদ্মনাম
মনে পড়া সব ছোটোবেলাকার মায়া
ঘুড়ি উড়িয়ে নাটাই ফেলে রাখা
রাত্রির শীত ঘুমন্ত গোরস্থানে
উবে যায় কোনো ঠোঁটবিকৃত ছায়া
সাপেদের ঘরে পড়ে আছে সব প্রেম
অল্প আলোয় সমুদ্রে ভাসে হাওয়া
চুপসে থাকে সমূহ বেদনা
জ্বলে ওঠে কোনো মর্মাহত চাওয়া
সব স্মৃতি আজ এভাবেই বিচ্যুত
মদ খেয়ে খেয়ে অতীত ভুলে থাকা
রেখে আসি জল কথা না রাখার ছলে
ঘুমন্ত ফুল মাঝপথে ঘনীভূত
'বেঁচে থাকা'- এই ভাবনা এসে যায়
চিতায় শোয়ানো হাতটা কীভাবে ধরি
পুড়ছে হৃদয় মানুষের কোলাহলে
ঝাপসা চোখে নিজেকেই গুলি করি!
শহর,ঘোড়া এবং তোমার ক্ষত
এই শহরের কোনো নদীর পাড়ে বসে আমরা গল্প করছি আর
আত্মায় ভাসাচ্ছি মেঘের অনুভূতিগুলো
আমাদের স্পর্শে কোনো তহবিলে জমে যায় চোখের জল,
কিছু মানুষ ঘনীভূত হয়ে যায় বেদনায়
যেন কাটাচ্ছি এক চিন্তিত দুঃসময়
আমাদের ঘড়িতে ইঁদুরগুলো ছুটোছুটি করে,
এই ভালোবাসায়-
নিঃসঙ্গতার কোনো চুমোতে ঘোড়াগুলো জিতে যায়,
আর ফেরত পাঠায় একটি মলিন চিঠি
তুমি সিগারেট খাচ্ছো তবুও,
এইখানে আমার ঠোঁট হয়ে যাচ্ছে ক্ষয়
বিশ্বাসতো এখন শুধু সাময়িকী পত্রিকার মতো,
এই পথযাত্রায় ভীষণ আতংকিত হই
বোমা ফাঁটে,কান্নায় জর্জরিত হয়ে যায় ছেলেবেলাকার স্মৃতি,
একরাশ অনুতপ্ত নিয়ে আমি চিৎকার করি,
তোমার খুব ভয় হয়
তবুও তুমি হাত ধরে আছো,
এই জাদুর ছায়ায় গোরস্থানের প্রতিটি কবরের
কঙ্কালগুলো যেন শান্তি অনুভব করে
আর সাথে বাজিয়ে দেয় সর্তক ঘন্টা এই নিষিদ্ধ
অন্ধকারে
তুরাইন
(১)
যাবো না আজ
এই গলিত তুষার বেয়ে নেমে আসছে ভিসুভিয়াস
অনেক অন্ধ হয়ে রয়েছি,
এই দামিদের মাঝে
ছেঁড়া-ভেতরের নীল শার্ট
সূর্যাস্তে বয়ে যায় কত খুন
(২)
তুরাইনকে ভালোবাসি!
এইতো আমার বন্ধুরা জানে
জলে কোনো মাছ চলে যায়,
আসন্ন বিপদের ধ্বনিতে ঘৃণাগুলো অসমাপ্ত থাকে-
সুর বাজে
এই জন্ম নেয়ার পর থেকে শুধু আগুন,শিখে নেওয়া
এই শতাব্দীর প্রতিবাদ
আমার বন্ধুরা জানে
তুরাইন কে ভালোবাসি!
কোনো বিশ্বস্ত সন্ধ্যায়
যেখানে প্রিয়জনেরা উপস্থিত,
সেখানে সারোয়ার রাফি নির্বাসিত হয়ে আছে.
(৩)
ক্ষমা নেই-
দেখো কেড়ে নিয়ে চলছে
আর খুলে ফেলছে
এই নিবন্ধিত চোখ
তবুও দেখতে দাও
ক্ষমা আছে-
দেখো কেড়ে নিয়ে আসছে আর পরিয়ে দিচ্ছে নগ্নতা
মৌলিক অধিকারের একটিকে আমি দেখতে পাচ্ছি না,
যেখানে মৃত্যু থাকে শয্যায়,
গড়ে উঠে কবর
(৪)
এই আঘাত-
আর কবিতায়
পাহাড় থেকে ভেঙ্গে যাচ্ছে কারো ভ্রমণ
ক্ষত চুমো,কত চুমোর অভিবাদনে যাত্রা শেষ হয়
আমার খুব ক্লান্তিতে অন্ধকার
এই সভ্যতা কী দিবে,
কিছু আছে পরিশিষ্ট,
প্রচন্ড বজ্রপাতের ভয় লেগে আছে
তুরাইন আমার প্রেমিকা
(৫)
এই বৃষ্টিতে ব্যর্থ কবি
যে কিনা প্রেমিকার সাথে যেতে পারেনি আত্মহত্যায়
এই বৃষ্টিতে মানুষের চোখ দিয়ে জল ঝরার পরিবর্তে
ধ্বংস ঝরে
বহু আইন,ছড়িয়ে আছে
স্মৃতিকাতরতায়
(৬)
তবুও থেমে নেই কেউই,
যে যার মতো কেড়ে নিয়ে যাচ্ছে
আমি লিখছি একটি কবিতা-
খুব অভিমান যখন রক্তে কোনো আবৃত্তি হবে না,
নরম কোনো বিশ্বাসে চলে যাওয়া
জাতিসংঘের শোক,
সমাহিত করার পর বক্তৃতা
আমার কথাগুলো যেন হাসপাতালের মর্গে লাশ হয়ে
শুয়ে আছে!
হয়তোবা
হয়তোবা কারো ঠোঁট হারাবে জলে,
ভেতরে রয়ে যাওয়া এক গভীর খাদ
জামা পরিহিত কোনো আগন্তুক তোমার হাত ধরে
উল্লাসে নেচে উঠবে
রক্তে অজস্র গোলাবারুদ বইবে
তুমি বাঁধা দিতেই হয়তো বা,
একটি নিষ্পাপ রাজহাঁস খুন হয়ে যাবে
হয়তোবা এটা ভোর,
কোনো নদীর উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে মানুষেরা বেদনার
কাছে অভাবের কথা বোলবে-
মধ্যরাতে স্বামীদের ব্যথা
এই শীতার্ত চোখ দিয়ে মদ ঝরে পড়বে
আমি আসক্ত এক মাঠে-একা
জলস্রোত দেহ নিয়ে যাবে
হয়তোবা একাকী কোনো সন্ধ্যায় স্নানরত জোনাকিরা
পরিহাস কোরবে প্রজাপতিদের কাছে-
এই গলিতে মাতাল ভঙ্গিমায় থাকবে স্বর
তুমি জানালার পর্দা সরাবে
হাতে নিয়ে ব্যর্থতা-
আমার কবিতার বইটি হয়তোবা শেষ নিঃশ্বাসরূপে
তোমার কাছে পৌছে যাবে!