তোকে একটা চিঠি দেবার কথা ছিলো। লিখিনি কোনোদিন। একটা
অযাচিত সুযোগ পেয়ে গেলাম। প্রেমপত্র চেয়েছে একটা ব্লগ-জিন। আমাদের চিঠি তো এমনিই
হবার ছিলো। মাথা গা পা এসব তো আমাদের নেই। তোর শুধু জল আর আমার অস্তিত্বটাই তো...।
বুঝতে পারিনা নিজেই। কেন আমাকে ‘সুখ’
বলে ডাকিস জানতে চাইলাম যেদিন, গাইলি
– সুখ বলে যদি সুখ আসে জীবনে...। যখন বললাম তোর নিজের কথা
নেই? বললি – আমি তো আর কবি নই?
নাইবা হলি। নদী তো। তুই যেমন আমাকে দেখতে পাস আমিও তোকে দেখতে
পাই। অফিসের কাজ করছিস। টেনশন করছিস। বকুনি খেলে তোর গালে কেমন জলের দাগ হয়। কে
তোর বুকের থেকে বালি তুলে নিয়ে যায় রোজ। আমি তোর ক্ষতে মনে মনেই হাত বোলাই। তোর
নরম দুটো বুকের মাঝখানে সূর্যকে বসিয়ে
দিই। নিজেকে ঈশ্বর মনে হয়। সারাদিন তো এতো কথা বলিস ফোনে তার পরেও কেন চিঠি চাস এতবার? আমার কবিতা গুলো তো চিঠিই। তোকে বলতে চাওয়া গুলো যখন আমারই একটা
স্বত্বা বলতে দেয় না আর আমার মনে হয় ওদের বুক ফেটে যাচ্ছে তেষ্টায় তখনি আমি লিখি।
ভুল বললাম, ওরাই আমাকে দিয়ে লেখায়। পুরুষের কান্না পেলে
এস্রাজ বাজাতে হয় বলেছিলেন কেউ। আমি এস্রাজ বাজাই। না একটাও বাজনা আমি বাজাতে জানি
না। তবু আমি একেক সময় এস্রাজ বাজাতে পারি।
তোর স্বামী যখন তোকে মারে আমার নিজেকে নপুংসক মনে হয়। আমার স্ত্রীকে যখন আমি
আগুনের স্পর্শ নিয়ে ছুঁই দেখি তোর জল বাষ্প হয়ে যাচ্ছে। তোর সাথে দেখা না হলে
নিজের আরেকটা অস্তিত্বকে দেখতেই পেতাম না। বিয়ের আগে প্রেমিকাকে দেখার ওকে পাবার
কি মারাত্মক একটা টান ছিলো। আর বিয়ের এতোগুলো বছর পর ও আছে সেটাই বুঝতে পারিনা কতো
সময় । অনেকবার বুঝতে চেষ্টা করেছি এটা কি ২য় প্রেম? তারপর
নিজেই আবিষ্কার করলাম, প্রেমের ২য় হয় না। সে যতবার হয়
ততবারই প্রথম। না এটা প্রেম নয়। হাজারবার মানুষ যে শরীরী স্বত্বার কাছে বসে,
তাকে আমি অনেক ভালো করে
দেখেছি তুই আসার পর। অভিজ্ঞতা থেকে জেনে গেছি
শরীর থেকে আমি কিছুই পাবো না। তোর আমার দুজনেরই সেই টান শেষ হয়ে যাবে
একদিন। ১ম বারের মতো অতোটা সময়ও লাগবে না। মানুষ স্বপ্নের মতো তৃপ্তি অন্য কোথাও
পেতে পারে না। অভিজ্ঞতা নিজেকে পুরানো করে দেয়। যেটার অভিজ্ঞতা নেই সেটাই নতুন।
তোকে আমি নতুন করে রেখে দিতে চাই। এই চিঠিটা তুই পুড়িয়ে ফেলিস। পড়ার পরেই। অন্তত
একটা চিরনূতন কিছু থাকবে তোর কাছে। একদিন আমাকে লিখতে পারবি—“তোর কাছ থেকে রোজ একটা করে চিঠি করে আসে। একটা করে ক্যানভাস। আমি রোজ
নূতন ছবি আঁকতে পারি”।
তোর সুখ