শামীম আহমেদ এর কবিতা


বজরা

তোমার উরুর গন্ধে মাতাল হয়েছে গ্রীষ্ম
ভিজিয়ে দাও,
দেবে?
তোমার ভেতরে উষ্ণ গহ্বর ধরে উত্তপ্ত রাজপথ
তাই বুঝি নিজেকে জলাঞ্জলি দিয়ে মিছিল হয়েছি,
ক্রমাগত হেঁটে চলেছি আরও গভীর থেকে গভীরে

তোমার ভেজা চুলে কামনার ঢল নেমেছে
অথচ আমার মিছিল এখনও শেষ হয়নি
আরেকটু কাঁপাই চলো রাজপথ
আরেকটু বজ্রপাতে প্রকম্পিত জমিনে
এবার দেখো ভালো ফসল হবে!

তোমার উত্তপ্ত ঠোঁটে বসন্তের আগুন
শুষে নাও,
নেবে?
তোমার চলার পথে বড় বেশী কম্পনশীলতা দেখে বজরা হয়েছি,
খরস্রোতা নদীর ভেতর বৈঠা চালিয়েছি গভীর থেকে গভীরে...


ইজারা!

তোমার নিচের ঠোঁটের ইজারা নিয়েছি তাই
বিশ্বব্রক্ষান্ড নিলামে দিলাম!

অথচ যে দাম উঠেছে ভয় হয়
বিশ্ব নয়
তোমারই আঁচল দিয়ে ঢেকে দিলে নক্ষত্রপুঞ্জ, নীহারিকা সব
কিংবা ধরো ঈশ্বরের মোহ যদি সাজিয়ে রাখি জুয়ার টেবিলে
জিতে নেই সবগুলো স্বর্গ-নরক

তবুও কিছুই হবে না, একটুকরো চুমুরও দাম হবে না ওতে
অথচ ইজারা নিয়েছি দ্যাখো
তোমার নিচের ঠোঁটের!


ইমার্জেন্সি লাইট

যারা মধ্যরাতে ইস্কাটনে মদ্যপ থাকেন, অথবা ধীর পায়ে ফিরে আসেন তাহাজ্জুদ নামাজ থেকে, তাদের কেউ কেউ দেখে থাকবেন একটি অফ-হোয়াইট সাদা এলিওন ঠিক রাস্তার মাঝ বরাবর ইমার্জেন্সি লাইট জ্বালিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে কেউ কেউ খেয়াল করবেন গাড়ির পেছনের জানালায় অমাবস্যার কালো অন্ধকার থাকে আর সামনে জানালাগুলো ঘোলা কনকনে শীতল এসিতে কুয়াশা জমে থাকে জানালার কাঁচে, দরোজায়, জানালায় ভেতরে যে তরুণটি গাড়ি চালায় তার জিনসের প্যান্টে কামনা বাসা বাঁধে দিনের পর দিন, পকেটে লোডেড গান আর পাশের সিটে একজন বিষণ্ণ তরুণী, এলোচুলে যৌবন সামলানোর ব্যর্থ চেষ্টায় ভীত। তরুণীর ওপরের বোতাম খোলা সাদা শার্টের ভেতর থেকে বের হয়ে আসতে চায় কামনার সবটুকু পিরামিড। গাড়িটি অল্প অল্প কাঁপে। গাড়ির নিচ থেকে টপ টপ করে কুয়াশা ঝরে পড়ে, সারিবদ্ধভাবে গড়িয়ে যায় শবযাত্রা। কেউ কেউ দেখে। অভিশাপ দিতে দিতে পাশ দিয়ে চলে যায় ভন্ড ধার্মিক। যদিও এখন সবাই জেনে গ্যাছে; গতবছর প্রেমিকার প্রেমিকের গুলিতে মারা যাবার ঠিক আগ মুহুর্তে আমি যেমন জেনেছিলাম, ইমার্জেন্সি লাইটের জন্ম শুধুমাত্র মধ্যরাতে প্রেমিকাকে চুমু খাবার জন্য।

SHARE THIS

Author: