ক্ষতচিহ্নগুলোই কথা হয়ে ওঠে ।। নৈরিৎ ইমু



স্মার্ট লাইন থেকে আপনারা ছুড়ে ফেলছেন সিগারেটের অবশিষ্টাংশ, থিরথির কাঁপতে থাকা পাতার দিকে তাকিয়ে মনে পড়বে বহুদিন আকাশ দেখেন নি। আকাশের ভেতর অনেক আকাশ জানে না রেনকোট কী। তবু এই বৃষ্টিনগরীতে নেকাব পরে হাসতে থাকুন। নো ম্যানার'স জোন থেকে আপনাদের দেখাতে পারি পর্দানশীন নারী। পকেটের চিরুনি সামলে রাখুন, চুলবুল পাণ্ডের মতো কলারের পেছনে ঝুলান সানগ্লাস। সন্দিগ্ধ চোখ হয়ে ওঠে রোমান্স সৈকত। আসুন, প্রাক্তন পুষ্পবিশারদের কাছে যাই। টগর ব্যবচ্ছেদ করে যিনি পেয়েছিলেন হিংসাপরায়ণ মুখ। সুতরাং আরও দাউদাউ জ্বলুক টগর-বাগান। প্রসঙ্গক্রমে কোন দমকল কর্মী প্রেমিক হতেই পারে। আমরা তাকে স্মরণ করতে পারিতিনিই পৃথিবীর প্রথম স্তৈন।

জেলাস একধরনের সংকট। জেলাসে আক্রান্ত মানুষ ভিন্ন ভিন্ন কমলার কোষের মতো, অথচ একই স্থানে সংযুক্ত। দর্শন বলতে যত্ন করে তুলে রাখা ঘাগরার কথা ভাবতে পারেন, পছন্দের রঙে। হঠাৎ কোন ল্যাভেন্ডার দেখলে, চীনাদের মতো প্রণাম ইচ্ছা জাগতেই পারে। প্রচণ্ড সুগন্ধিকে ভাবুন নিজ নিজ ধর্মের অতি-আবশ্যক উপাদান। দেখুন, ল্যাভেন্ডার গাছের ছায়ায় কতক মানুষের কমলা ছিলার দৃশ্য।

আপনাদের মানিব্যাগে রাখা সাদাকালো ছবিটি সহজেই হয়ে উঠতে পারে দুর্ধর্ষ ডাকিনী। যার জন্য কেটে ফেলা শিরা এখনো কাতরাচ্ছে তুমুল। অতিথি বন্ধুর প্রতি সর্বোত্তম শীতল হাসি, সে হাসির সময়কাল নির্ধারণ করবে ঘড়ির বদলে ব্যবহৃত বারোটা টিকটিকি। তারা জানে, নীরবতার চেয়ে বিরহী বাজনা ভালো।

আসুন, উড়িয়ে দিই বনভোজনের পাখি। নখের সাথে কেটে ফেলি আমাদের খামচিগুলোও। আদতে মুখনাট্যে তেমন কোন মুখের দেখা পাওয়া যায় না, যা শুধুই হৃৎ-সংকোচনের উপসর্গ মাত্র। পাহাড় চূড়ার দিকে তাকিয়ে শুঁকতে পারেন পুরনো রুমালের গন্ধ, কেননা আগামীকাল গোমরামুখো মথের মতো।

হাতের তালুতে দেখুন, বৃত্তাকার ফুলের মতো রেখাগুলো কত অপূর্ব ফুটে আছে। সেইসব রেখাধরে কেউ মাতালের মতো হাঁটছে, যিনি মাতাল তিনিই আপনাদের টলমল ভাগ্য হয়ত। তাকে গান শুনান। বলুন, এভরিথিং ইস ফাইন। ক্ষুধা লাগলেও এখন গন্ধম খেতে কোন বাঁধা নাই। যদি'না মানুষ হুর গ্রহণেচ্ছায় মৃত্যুকে ভেবে বসছে প্রয়াত হাসি।

মন জিনিসটা মানি-প্ল্যান্টের লতার মতো এবং কী প্রচণ্ড সবুজ! আপনারা একটি সকাল এ নিয়ে বিস্তারিত চিন্তা করতে পারেন। কারণ এই সবুজপত্রে বসবাসরত পড়শিটিকে প্রশ্রয় দিতেই ভালোবাসেন। তার সাথেই ম্যানার'স জোনের উচ্চতম ব্রিজে পা-ঝুলিয়ে বসে কফি পানের ইচ্ছা আছে। খুব দুঃখিত, এন্টিসেপটিক নেই। এখানে বরং একটা সিঁড়িপথ ভাবা যাক, আলাদা আলাদা আপনি তার শেষ ধাপে দাঁড়িয়ে আছেন। আসলে আপনাদের হাতে বিস্ফোরিত ডালিম, যেটা সাক্ষ্য দিচ্ছে হৃৎপিণ্ডের অবস্থা। চোখ বন্ধ করুনফ্ল্যাশব্যাক যে উজ্জ্বল তরুণীটি হাসছে তাকে অবশ্যই চিনেন।


আপনাদের সাধের সাইকেল (সম্ভবত পনিক্স) এখন আর যাদুঘরেও রাখার কথা না। কারণ সেখান থেকেই বেয়ারিং খুলে কোন শিশু আর বানাচ্ছে না আনন্দ-ঠেলাগাড়ি। কোন দ্রুতগামী ট্রেনের শেষ কামরায় বসে আপনারা হয়ে উঠছেন গোল্ডফিস। পাঁচ মিনিট আগের স্মৃতিও মনে পড়ছে না। তবু কিপ ইন টাচ বলে একে-অপরের বিদায়। মাঝে মাঝে আত্মহত্যাকেও কবিতার মতো লাগে!

SHARE THIS

Author: