কালের লিখন এর কবিতা


কালের লিখন এর কবিতা 


'রেলগেটে সন্তান জন্ম দিয়ে এক প্রতিবন্ধী ট্রেনে কাটা পড়েছে'

জন্মকালীন অন্ধকার

খিলগাঁ রেলগেটে প্রচুর মাছ উঠে সন্ধ্যে হলেই
জ্যান্ত মাছ সমানতালে লাফায়,
যাদের কাঁচা টাকা, তারা কিনে নিয়ে যায়।
কিছুটা খায়, কিছুটা অন্যকে দেখায়।
পঁচা মাছের মতো কিছু কিছু লোক,
প্রায়ই স্বপ্নহীন স্বপ্নে ভাসতে ভাসতে ট্রেনে কাটা যায়।

ব্যস্ত রাস্তার ডিভাইডারের ছোট্ট ফাঁকে
একটা পাগলী থাকে, পরিসংখ্যান বলে-
জগতের সকল পাগলীই বৃদ্ধ, নোংরা আর অচ্ছ্যুত।
তাদের শরীর শুধুই শুকনো মাংসের দলা।
সবাই শুধু চিৎকার শুনে তার,
কেউ জানে না তার স্বাভাবিক গলা।

'মাস আগে পাগলিটার ক্ষুধাক্লিষ্ট
শুকনো পেট স্ফীত হতে শুরু করে।
আজ সকালে রাস্তার পাশে ভেসে যাওয়া রক্তের মাঝে
ফুটফুটে এক শিশু লাফাচ্ছিল জ্যান্ত মাছের মতো।
পাগলিটা পাশেই বসে বসে শুকনো পাউরুটি খাচ্ছিলো।

পত্রিকার নিউজ বলছে-
 
'রেলগেটে সন্তান জন্ম দিয়ে এক প্রতিবন্ধী ট্রেনে কাটা পড়েছে।'
লোকাল বাসে বসে তিন টাকায় কেনা পত্রিকার
কোথাও খুঁজে পেলাম না- শিশুটির বাবার নাম!


ঘুমন্ত ত্রাতা

যখন শিশুটির হাত চেপে ধরা হলো, সে ভাবলো-
তাকে রক্ষায় ঈশ্বর এখনি ছুটে আসবেন মেঘের আড়াল থেকে,
যখন মেয়েটির মুখে কাপড় গুঁজে দেওয়া হলো,
মেয়েটি ভাবলো- ঈশ্বর এখনি বিকট শব্দে ধমক দিয়ে উঠবেন।
যখন যুবতীটি পাশবিক নির্যাতনে বিক্ষতপ্রায়-
তখনও কোথাও ঈশ্বর নেই' নেই-নেই! কোথাও ঈশ্বর নাই!

ঈশ্বর ধর্ষক সৃষ্টি করেন, ধর্ষণকার্য অবলোকন করেন!
অপেক্ষায় থাকেন আর অলীকবার্তায় বলেন-
"তোমার কার্য শেষ হইলেই আমি তোমাকে শাস্তি প্রদান করিবো!"
সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার সর্বশক্তি অর্থহীন হয়ে যায়-
ধর্ষকের শিশ্নের কাছে, নরপশুর পেশীর উল্লাসে ভীত ঈশ্বর।
তিনি তার শক্তি প্রয়োগ করেন না,
আর্তের চিৎকার তাঁর কানে পৌঁছায় না সপ্তাকাশ ভেদ করে।

ঈশ্বর ভুলে গেছেন তাঁর নিজের ক্ষমতা,
বসেবসে পাহারা দিচ্ছেন, বেদ, বাইবেল কোরআন, গীতা!
আমার যদি ক্ষমতা থাকতো ধর্ষণ থেকে শিশু বাঁচাবার!
নিশ্চয় তা প্রয়োগ করতাম, এখানেই ঈশ্বর থেকে তফাৎ আমার।


SHARE THIS

Author: