ফারহান হাবীব এর কবিতা
'কোনো মতে আধপেটা বেঁচে থেকে আমাদের এই যাপিত জীবন'
উড়াল সেতু
১.
ইটের দেয়াল দেখে দেখে
শক্ত হোক মন।
হারিয়ে যাক রাধা-কৃষ্ণের গল্প,
হারাক মানবিক সব রূপকথা।
ঝাউয়ের বন ভেদ করে
উড়ে যাক উড়াল সেতু। ততদিন
আমরা অমানুষ হবার কৌশল প্র্যাকটিস করি।
২.
উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে যায়
আদমের দ্বীপ। কুল খুঁজে পায় না,
হাতড়ায় সাগরের মাঝখানে।
উন্নয়ন তুমি প্রেমের নাম করে
এক প্রতারক প্রেমিক অথবা প্রেমিকা।
তুমি দূষিত নগরীর, তুমি নির্লজ্জ,
তুমি মিথ্যা মিথ্যা মিথ্যা।
(প্রথম
কাব্য গ্রন্থ ‘প্রস্তুতি পর্বের কবিতা’ থেকে )
বারুদের বজ্রপাত শেষে
অবশেষে এইবারে,
সীমান্তের এই পাড়ে
লাল চোখা নওজোয়ান ওই পাড়ের
পাখির বুকে চালালো এক বারুদের বজ্রপাত।
তখন ওই পাড়ে,
এইবারে প্রথম
পাখির শোকে ওঠে মাতোম,
হিসেব বুঝে যায় পাগড়ী মাথার মচুয়া নওজোয়ান।
অতঃপর,
'রক্তের বদলে রক্ত'
খেলা শেষে
বজ্রপাত থেমে গেলে
শান্তির পতাকার প্রেমময় বাতাসে
ছিঁড়ে যায় সব কাঁটাতার।
ব্রেকিং নিউজ-
'নওজোয়ানদের ছুটি দিয়ে
আজ থেকে সীমান্ত জুড়ে শুরু হলো
সুখ ফেরি করে ঘোরা সাদা সাদা সব পায়রার বসবাস'।
সাঁজোয়া যান
এ চাই ও চাই
বাঁচার মতো বাঁচতে চাই বলে
গ্যাস্ট্রিক আর আলসার পেটে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কতিপয় বামপন্থি তরুণ।
উন্নয়নের মঞ্চে কথার নৃত্য হর-হামেশাই দেখা যায়।
আর ডাকসাইটে শিক্ষক,কবি,
শিল্পী, বৃদ্ধিজীবি অথবা কলাকুশলীদের কোনো দাবি নাই,
বিনিময়ে মেলে মহারাজার তৃপ্তির নাজরানা,
সভামঞ্চ গেয়ে
ওঠে-
বাহবা বাহবা।
তারা দেখেও দেখে না,
শিক্ষা নাই
চিকিৎসা নাই
বাসস্থান নাই
চাকরি নাই;
কোনো মতে আধপেটা বেঁচে থেকে আমাদের এই যাপিত জীবন।
তবু, যেইনা মুখ খুলি অমনি
আমারই টাকায় কেনা রাষ্ট্রীয় সাঁজোয়া যান
আমারই দিকে তাক করা।
মহারাজা,
তোমার ওই সাজানো যানের বিপরীতে
আমি প্রতিদিন তিন বেলা নিয়ম করে-
শিশ্ন দেখাই
শিশ্ন দেখাই
শিশ্ন দেখাই…